পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ৬ষ্ঠ পরিঃ "שטיכו যশোরের লোকদের এক বাসা ছিল। শিশির বাবু সেখানে মধ্যে মধ্যে আসিতেন। তিনি আসিলেই আনন্দবাদী দলের সমাগম হইত। তঁহারা আমাকে ডাকিতেন। সে সময়ে প্রধানতঃ সঙ্গীত ও সঙ্কীর্ত্তন হইত। টাকী নিবাসী শ্রদ্ধেয় বন্ধু হরলাল রায় সেই কীর্ত্তনে গড়াগড়ি দিতেন। শিশির বাবু চমৎকার কীর্ত্তন করিতে পারিতেন। তঁহার কীর্ত্তনে আমাদিগকে পাগল করিয়া তুলিত। সেখানে নূতন ধরণের সঙ্গীত হইত। কয়েক পংক্তি উদ্ধত করিলে তাহার ভাব হৃদয়ঙ্গম করিতে পারা যাইবে । একটি সঙ্গীতে ঈশ্বরকে সম্বোধন করিয়া বলা হইত, তোমার রাগে রাঙ্গা নয়ন তলে বহে দেখি প্রেমধার । আর একটি সঙ্গীত যাহা তঁহাদের মুখে সর্ব্বদা শুনিতাম, তাহা এই— মা যার আনন্দময়ী তার কি বা নিরানন্দ ? তবে কেন রোগে শোকে পাপে তাপে বৃথা কান্দ ? মাঝখানে জননী ব’সে, সন্তানগণ তার চারি পাশে, ভাসাইয়াছেন প্রেমময়ী প্রেমনীরে । এক বার বাহু তুলে মা মা ব’লে নৃত্য কর সন্তানবৃন্দ। এই গান করিয়া সকলে নৃত্য করিতেন। এক দিকে যেমন অনুতাপ ও ক্রন্দন শুনিতাম, অপর দিকে হঁহাদের কাছে গিয়া আনন্দ ও নৃত্য দেখিতাম। তখন ইহা বেশ লাগিতা। শিশির বাবুদের ভাইয়ে ভাইয়ে ভােব দেখিয়া মন মুগ্ধ হইয়া যাইত। ইহার পরেই তাহারা কলিকাতা হিদেরাম বাড়য্যের গলিতে আসিয়া বাসা করিয়া থাকেন। সে সময়ে তঁহাদিগকে সর্ব্বদা দেখিতাম। শিশির বাবুর অমায়িকতা দেখিয়া আমার মন মুগ্ধ হইয়া-যাইত। এক দিনের কথা স্মরণ আছে, তিনি সেদিন আমাকে আহার করিতে নিমন্ত্রণ করিয়াছিলেন। আহারের সময় উপস্থিত হইলে বলিলেন, “কি পরের মত’ বাহিরে বসে খাবে । চল, রান্নাঘরে গিয়ে মাকে বলি, হঁাড়ি হ’তে গরম গরম ভাত