পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*98, 1 o ) ব্রাহ্ম দলে সমাদর ও তাহার ফল SS তরকারি মার হাতে না খেলে সুখ হয় না।” এই বলিয়া দুজনে গিয়া রান্নাঘরে আহারে বসিলাম। যত দূর স্মরণ হয়, তার জননী গরম গরম ভাত তরকারি দিতে লাগিলেন ও আমরা আহার করিতে লাগিলাম । ইহার পর হইতে শিশির বাবুরা অল্পে অল্পে ব্রাহ্মসমাজ হইতে সরিয়া পড়িলেন। ব্রাহ্ম দলে সমাদর ও তাহার ফল।—কিন্তু একটি কারণে এই সময় কিছু দিন ধরিয়া আমার আধ্যাত্মিক অবস্থা বড়ই অসন্তোয্যকর হইয়া গিয়াছিল। সে কারণটি এই। যত দিন আমি ব্রাহ্মদের পশ্চাতে ছিলাম ও আপনাকে অনেকাংশে হীন বলিয়া মনে করিতাম, তত দিন আমার অন্তরে বিনয় ও ব্যাকুলত ছিল। আমি আপনাকে সাধারণের মধ্যে ব্রাহ্ম রূপে পরিচিত হইবার অযোগ্য বলিয়া মনে করিতাম। কিন্তু দীক্ষার দিন হইতে সে অবস্থা চলিয়া গেল। আমি যেন হঠাৎ পশ্চাৎ হইতে সম্মুখে আসিয়া পড়িলাম ; এবং হঠাৎ যেন এক জন বড় ব্রাহ্ম বলিয়া পরিচিত হইলাম। আমি তখন ব্রাহ্ম দলের মধ্যে সর্বত্রই সমাদর পাইতে লাগিলাম। সে সমাদরের উপযুক্ত আমি ছিলাম না। বোধ হয় এতটা সমাদর পাইবার দুইটি কারণ ছিল। প্রথম, ১৮৬৮ সালের শেষে আমার “নির্বাসিতের বিলাপ’ গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ; প্রকাশিত হইবামাত্র উহা লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ও সর্ব্বত্র প্রশংসিত হয়। তদনুসারে আমি এক জন উদীয়মান কবি রূপে পরিচিত হইয়াছিলাম। দ্বিতীয়তঃ, আমার দীক্ষার সময় হইতে আমার মাতুল উন্নতিশীল ব্রাহ্ম দলকে “কৈশব দল’ নাম দিয়া সোমপ্রকাশে তাহদের প্রতি গোলাগুলি বর্ষণ আরম্ভ করেন, তাহাতেও আমার নামটা সাধারণের মুখে উঠে। যে কারণেই হউক, আমি তখন হইতে লোক চক্ষুর গোচর হইয়া এক জন মস্ত ব্রাহ্ম হইয়া দাড়াই। ইহাতে কিছু দিন আমার বিশেষ অনিষ্ট হইয়াছিল। আমার পূর্বকার ব্যাকুলত অনেক পরিমাণে হ্রাস হইয়া আমি কিছু অসাবধান হইয়া পড়ি ; যে সকল