পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নূতন পরীক্ষা । ᏕeᏓᏅᏄ —ইহা ভাবিয়া মনে মনে আনন্দ হইতে লাগিল। প্রসন্নময়ীক বুঝাইয়া তঁহাকে আনিতে গেলাম। আনিয়া আশ্রমে প্রসন্নময়ীর সহিত রাখিলাম । বিরাজমোহিনীর বয়স তখন ১৪১৫ বৎসর হইবে। বিরাজমোহিনীকে বলিলাম, “আমি যে এত দিন তোমাকে পত্নীভাবে গ্রহণ করি নাই, তাহার কারণ এই যে, আমার মনে আছে তুমি বড় হইয়া যদি অন্য কাহাকেও বিবাহ করিতে চাও, করিতে দিব। আর যদি লেখা পড়া শিখিয়া কোন ভাল কাজে আপনাকে দিতে চাও, দিতে পরিবে, এজন্য তোমাকে স্কুলে দিতেছি। তুমি এখন লেখা পড়া কর।” এই বলিয়া তাহাকে স্কুলে ভর্ত্তি করিয়া দিলাম। কিন্তু দিলে কি হয় ? তিনি প্রথম প্রস্তাব শুনিয়া চমকিয়া উঠিলেন, “মা গো ! মেয়ে মানুষের আবার ক’বার বিয়ে হয় ।” তঁহার ভাব দেখিয়া, পুনর্বিবাহের প্রতি দারুণ ঘুণ দেখিয়া, আমার এত দিনের পোষিত মাথার ভূত এক কথাতে নামিয়া গেল। আমি বুঝিলাম, দ্বিতীয় প্রস্তাবই কার্য্যে পরিণত করিতে হইবে। নূতন পরীক্ষা।—কিন্তু আর এক দিক দিয়া আমার আর এক পরীক্ষা উপস্থিত হইল। প্রসন্নময়ী ও বিরাজমোহিনী যখন এক ভবনে একত্রে বাস করিতে লাগিলেন, অথচ আমি বিরাজমোহিনীকে পত্নীভাবে গ্রহণ করিতে বিরত রহিলাম, তখন প্রসন্নময়ী হইতেও সেই সময়ের জন্য আমার স্বতন্ত্র থাকা উচিত বোধ হইতে লাগিল। তখন তঁাহার সঙ্গে বহু দিনের স্বামী-স্ত্রী সম্বন্ধ রহিয়াছে; তৎপূর্বে হেমলতা, তরঙ্গিণী ও প্রিয়নাথ তিন জন জন্মিয়াছে। কিন্তু আশ্রমে স্কুল ঘর ও কেশব বাবুর আপীস ঘর ভিন্ন অধিক বাহিরের ঘর ছিল না। রাত্রে প্রসন্নময়ীর ঘরে না শুইলে শুই কোথায় ? দূরে গিয়া থাকা আমার পক্ষে ঘোর সংগ্রামের বিষয় হইয়া দাড়াইল। প্রসন্নময়ীর পক্ষেও তাহা অতীব ক্লেশকর হইল। অবশেষে প্রসন্নময়ীকে বুঝাইয়া বিদায় লইয়া এখানে ওখানে শুইতে আরম্ভ করিলাম। ঘটনাক্রমে এক উপায় আবিষ্কার হইল ।