পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS8 শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ৭ম পরিঃ সকলে কঁকুড়গাছির বাগানে ভারত আশ্রমে, সায়ংকালীন উপাসনার পর কেশব বাবুর সহিত নানা প্রকার কথাবার্ত্তাতে আছি, এমন সময় কেশব বাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, “নিগেন্দ্র কই ?” অমনি নগেন্দ্র বাবুর অনুসন্ধান হইল। জানা গেল যে তিনি বৈকাল হইতে নিরুদেশ আছেন। রাত্রি প্রায় ৯টা বাজিয়া গেল, তখন চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের আবির্ভাব হইল । আমি তঁহাকে গোপনে ডাকিয়া বলিলাম, “আপনার খোজ হইয়াছিল, আপনি কোথায় ছিলেন ?” তিনি বলিলেন, “আজি মনটা বড় খারাপ আছে, তাই তিন চারি ঘণ্টা মাণিকতলার খালের ধারে বেড়াইতেছিলাম ও একটা গান বাধিয়া গাইতেছিলাম। এই বলিয়া গানটা গাইয়া আমাকে শুনাইলেন । সেটা এই— আমি কি ব’লে প্রার্থনা বল করি আর । আমার সকল কথা ফুরাইল, ফিরিল না মন আমার । তুমি দেখ সব থেকে অন্তরে, তোমায় কথায় কে ভুলাতে পারে, প্রাণের প্রাণ, বলব কি আর, কি আর আছে বলিবার ! ওহে, প্রাণ যদি চাহে তোমারে, তুমি থাকিতে কি পার দূরে ? আপনি এস পাপীর দ্বারে, তাই পতিতপাবন নাম তোমার। আমি শুনিয়া ভাবিলাম, নগেন্দ্র বাবু যে সন্ধ্যার সময় আমাদের সঙ্গে না বসিয়া একলা ছিলেন, সে ভালই হইয়াছে। কিন্তু প্রচারক বন্ধুগণ সকল সময়ে সেরূপ ভাবিতে পারিতেন না। তঁহারা মনে করিতেন, নগেন্দ্র যখন আমাদের সহিত কাজ করিতে আসিয়াছেন, তখন আমরা যেরূপে বসি দাড়াই, তঁহাকেও সেইরূপ করিতে হইবে। তঁহারা দিন দিন নগেন্দ্র বাবুর উপর চাটিতে লাগিলেন। ইহা লইয়া তাঁহাদের সহিত আমার বিবাদ হইতে লাগিল। আমি নগেন্দ্র বাবুর পক্ষ হইয়া তঁহাদের সহিত তর্ক বিতর্ক করিতে লাগিলাম। র্তাহারা আমাকে আলত্যের প্রশ্রয়দাতা বলিয়া তিরস্কার করিতে লাগিলেন ।