পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিচ্ছেদ ] মাতামহ প্রতিবেশীবর্গের অনেকের চক্ষের শূলস্বরূপ হইয়া বহুদিন ধরিয়া আমার মাতুল পরিবারের ঘোর অশাস্তির কারণ হইয়াছিল। তাহ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে বর্ণনা করিব । O তামহ মহাশয়কে আমার বেশ স্মরণ হয় । আমার ৯১০ বৎসরের সময় তিনি দারুণ উরুস্তম্ভ রোগে গীতাসু হন। তিনি উজ্জল শ্যামবর্ণ, প্রসন্নমূর্ত্তি, দীর্ঘাকৃতি পুরুষ ছিলেন। আমাকে “শিবরাম” বলিয়া ডাকিতেন। গৃহস্থালী বিষয়ে পরিপক্কতা তঁহার প্রধান গুণ ছিল। আমার মাতুলালয়ে সম্বৎসরের চাল ডাল প্রভৃতি গৃহস্থের প্রয়োজনীয় তাবৎ দ্রব্য এরূপ সঞ্চিত থাকিত যে, হঠাৎ কোনও দিন দশ পািনর জন অতিথি উপস্থিত হইলে, তাহাদিগকে দুই ঘণ্টার মধ্যে পরিতোষ পূর্বক আহার করান মাতামহী ঠাকুরাণীর পক্ষে কিছুই ক্লেশকর হইত না। মাতামহের মিতব্যয়িত ও পাকা গৃহস্থালীর একটি দৃষ্টান্ত দিতেছি। আমার বড় মামা দ্বারকানাথ বিদ্য ड्रষণ মহাশয়ের প্রথম পুত্র উপেন্দ্রনাথের শৈশব কালে হুক কলিকা হাতে লাইমা বেড়াইবার বাতিক ছিল। একটা হুক ও কলিকা না পাইলে বঁটা দিয়া ঘর ফাটাইত ; রাত্রে তাহার শয্যার পাশ্বে হুক কলিকা রাখিতে হইত ; রাত্রি দুই প্রহরের সময় জাগিলে হুক হুকা করিয়া কঁাদিত । সুতরাং, তাহার জন্য হুক ও কলিকা সর্ব্বদাই রাখিতে হইত। হুক ত বড় একটা ভাঙ্গিতে পারিত না, কলিকাগুলি দিনে ২৩ বার ভাঙ্গিত। মাতামত মহাশয় প্রতি শনিবার কলিকাতা হইতে গৃহে আসিতেন, আসিয়া রবিবার গৃহস্থালীর জিনিস গুছাইতেন। এক বার আসিয়া রবিবার কয়েক ঘণ্টা বসিয়া মাটি দিয়া এক ঝোড়া কলিকা গড়িয়া খড়ের আগুনে পোড়াইয়া রাখিয়া গেলেন ; অভিপ্রায় এই, উপেন যত পারে কলিকা ভাঙ্গুক। তখন এক পয়সাতে বোধ হয় আটটা কলিকা পাওয়া যাইত, সে ব্যয়টুকুও বঁাচাইবার দিকে তঁহার এত দৃষ্টি পড়িল । 喂 -