পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* २२७ শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ১০ম পরিঃ ভাড়া করিয়া ভারত সভার আপীস স্থাপন করিলাম। সে আপীস ঘরের অবস্থা দেখিয়া সুপ্রসিদ্ধ সুরসিক কবি ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তাহার প্রণীত ‘ভারত উদ্ধার কাব্যে লিখিলেন, “কড়ি আগে পড়ে কিম্বা দড়ি আগে ছেড়ে।” বাস্তবিক, উহার দশা ঐ প্রকারই ছিল। এই ৯৩নং কলেজ ষ্ট্রীট ভবনের ভিতর দিকে কতকগুলি ব্রাহ্ম বন্ধু থাকিতেন ; তঁহাদের সঙ্গে আমি কিছু দিন ছিলাম। তখন ভারত সভার ঘরে কমিটির সম্মতিক্রমে সমদর্শী দলেরও বৈঠক চলিত। এখানে থাকিবার সময়ই আমি বিষয়কর্ম্ম ত্যাগ করিয়া ব্রাহ্মসমাজের সেবাতে আত্মোৎসর্গ করি। যে চিরস্মরণীয় রাত্রে কেশব বাবুর নিকট প্রতিবাদ পত্র প্রেরণের প্রস্তাব নিদ্ধারণ হয়, সে রাত্রে এই ভারত সভার গৃহেই আমাদের বৈঠক হইয়াছিল । * বলিতে কি, ভারত সভা ও সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ যেন যমজ সহোদরের ন্যায় ভূমিষ্ঠ হইয়াছিল। একই লোক দুদিকে, একই ভাবে উভয়ের কার্য্য চলিয়াছিল। “পঞ্চ প্রদীপ’ ।—এদিকে আমি, কেদারনাথ রায়, নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, শ্রীযুক্ত কালীনাথ দত্ত ও শ্রীযুক্ত উমেশচন্দ্র দত্ত, এই পাঁচ জন বন্ধু একত্র হইয়া ধর্ম্ম সাধনের জন্য একটি ক্ষুদ্র দল করিলাম। আমরা পাঁচ জনে একত্র বসিতাম, প্রাণ খুলিয়া ধর্ম্ম বিষয়ে কথাবার্তা কহিতাম, নানা স্থানে মিলিত হইয়া উপাসনা করিতাম। মধ্যে মধ্যে ধর্ম্মোপদেশের জন্য মহৰ্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিকট যাইতাম তিনি আমাদের নাম রাখিলেন। ‘পঞ্চ প্রদীপ’ ৷ এক দিন বলিলেন, লোকে পঞ্চ প্রদীপে যেমন দেবতার আরতি করে, তেমনি তোমরা “পঞ্চ প্রদীপে ঈশ্বরের আরতি করিতেছ। নামটি আমাদের বড় ভাল লাগিল। আমরা আপনাদের মধ্যে আমাদের সম্মিলনকে পঞ্চ প্রদীপের সম্মিলন বলিতে লাগিলাম ।

  • একাদশ পরিচ্ছেদ দেখ।