পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [Aथम করিতে মীেমদ্রের কষ্ট হয়। মাতামহী এক বার জলসমেত ঘটীটি তুলিতে গিয়া বলিয়া উঠিলেন, “‘বাবা রে! এ ঘটার এক ঘটী জল যদি কেউ এক বারে খেতে পারে, তবে তাকে এক টাকা দিই।” আমনি জ্ঞাতিবর্গের মধ্যে এক পরিবারের একটি ছেলে ছুটয়া গিয়া ঘটট লইয়া জলপান করিতে বসিয়া গেল। মাতামহী ভয় পাইয় তাহার হাত ধরিয়া বলিতে লাগিলেন, “ওরে, তুই অত জল খাসনি, আমি টাকা দিব বলিছি, দিবই,” এই বলিয়া একটি টাকা আনিয়া তাহার হাতে দিলেন। আর এক বার এক দিন গ্রীষ্মকালে ভয়ানক রৌদ্রে উঠান তাতিয়া অগ্নিসমান হইয়াছে। এমন সময় মাতামহী ঠাকুরাণীর এক বার গোলাতে যাওয়ার অবশ্যক হইল। উঠানে পা দিয়াই বলিয়া উঠিলেন, “‘বাবা রে ; যেন আগুন, এ উঠানে যদি কেউ দুদণ্ড বসতে পারে, তবে তাকে দুটাকা দিই।” আমনি এক জন যুবক প্রস্তুত ! সে লম্ফ দিয়া সেই তপ্ত উঠানের মধ্যে গিয়া বসিল। মাতামহী একেবারে অস্থির হইয়া উঠিলেন ; “ওরে তুই উঠে আয়, আমি দুটাকা দিচ্ছি,” বলিয়া তাহাকে দুই টাকা দিলেন। বাস্তবিক তঁহার মত’ কোমলহৃদয় দয়াশীল, স্বজনবৎসলা, উদারপ্রকৃতি, সত্যপরায়ণ নারী অল্পই দেখিয়াছি। আমার বড় মামা দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ মহাশয় ধর্ম্মভীরুতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। সে ধর্ম্মভীরুতা তিনি জননী হইতে পাইয়াছিলেন । মাতামহীর বৃদ্ধাবস্থায় আমার দুই মামী যখন ঘরকন্নার ভার লাইলেন ও তঁহাকে সংসারের খুঁটিনাটি হইতে নিস্কৃতি দিলেন, তখন ধর্ম্মচিন্তা, দরিদ্রের সেবা ও গৃহস্থ শিশুগণের পালন তাহার প্রধান কাজ দাড়াইল। তিনি প্রতি দিন প্রাতে প্রায় অৰ্দ্ধ ক্রোশ পথ হঁটিয়া গঙ্গাস্নান করিতে যাইতেন, এবং স্নানান্তে ফিরিবার সময় পথের দুই পার্শ্বে পরিচিত দরিদ্র পরিবারদিগকে দেখিয়া আসিতেন। এটি তাহার নিত্য ব্রতের মধ্যে হইয়াছিল। এজন্য তিনি নিজ ব্যয়ের টাকা হইতে কয়েক