পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮৮২-৮৮ ] কাশীতে পিতাঠাকুর মহাশয়ের গুরুতর পীড়া Ꮽ)Ꮚ9) বাবা তাহার মুখের দিকে চাহিয়া কাদিতে লাগিলেন। আমি ডাক্তার বন্ধুকে বাবাকে দেখিয়া পাশ্বের ঘরে আসিবার জন্য অনুরোধ করিয়া সেই ঘরে গেলাম। তিনি আসিয়া বলিলেন যে, নাড়ী আবরি পাওয়া যাইতেছে। আমি জগদীশ্বরকে ধন্যবাদ করিলাম। ইহার পরে আমি আমার জননীর দ্বারা বাবাকে আমার সঙ্গে কথা কহিবার জন্য অনুরোপ করিতে লাগিলাম । বলিলাম, “আমাকে রোগের বিষয়ে বিশেষ বিবরণ না বলিলে আমি কিরূপে ডাক্তারকে বুঝাইয়া দিব ?” তাই বুঝিলেন বলিয়াই হউক, বা তাহার যেদিন পাড়া হইয়াছে তৎপর দিনেই কিরূপে আসিলাম এই ভাবিয়াই হউক, আমার উপবীত পরিত্যাগের আঠার উনিশ বছরের পরে বাবা আমার মুখ দেখিলেন ও আমার সঙ্গে কথা কহিলেন । এত যে গুরুতর পীড়া, তাহাতে বাবাকে কিছু মাত্র স্নান বা বিষগ্ন মনে হইত না। ডাক্তার হাত দেখিয়া বলিতেছেন, “নাড়ী পাওয়া যাচ্ছে” ; বাবা হাসিয়া বলিতেছেন, “আনাড়ীর আবার নাড়ী !” মা কঁাদিতেছেন, বাবা হার দিকে অঙ্গুলি নিৰ্দেশ করিয়া আমাকে বলিতেছেন, “কেমন অজ্ঞ, দেখেছি ? যার জন্য কাশীতে আসা, তাহ ঘট বার উপক্রম ; কোথায় আমোদ কারণে, ন, কান্না ! কাশীতে কিছু বিষয় বাণিজ্য করতে আসি নি ; মরতে এসেছি , সেই মরণ এসে উপস্থিত, তাতে আবার শোক কেন ?” আমি বলিলাম, “বাবা ! আপনি ত সহজ কথাগুলো বললেন, মার প্রাণ তা শুনবে কেন ?” বাবা বলিলেন, “তবে ঔর এখানে আসা উচিত হয় নি।” তার পর শোনা গেল যে কচি তালের জল দিলে হিক্কা থামিতে পারে । কচি তাল কোথায় পাওয়া যায় আমি সেই চেষ্টায় বড় ব্যস্ত হইলাম। পর দিন প্রাতে আমার এক জন বন্ধু তাঁহাকে দেখিতে আসিলেন । বাবা হাসিয়া তাহাকে বলিলেন, “দেখ হে, তাল না পেলে এ তাল সামলাচ্ছে না।” তিনি যাইবার সময় হাসিয়া বলিয়া গেলেন, “একে মারে কে ? এমন মানসিক বল ত সচরাচর দেখা যায় না ।” RSSD き