পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৩৬ শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত ' , [ ২২শ পরিঃ প্রভৃতি তরকারির উল্লেখ করিতে লাগিল ; কিন্তু মাছের নাম করিল না। আমি মনে করিলাম, খুব সম্ভবতঃ মাছ খাইয়াছে, কেবল নাম করিতে ভুলিয়া যাইতেছে। বলিলাম, “তুমি আর একটা জিনিস খেয়েছ, আমাকে বলছি না কেন ? তুমি মাছ খেয়েছ।” তখন তার বড় আশ্চর্য্য বোধ হইল। সে মনে করিল, আমি পেটের বাহিরে অঙ্গুলি দিয়া মাছ খাওয়া ধরিলাম কিরূপে ? সে হাসিয়া বলিল, “তুমি জানলে কি ক’রে ?” আমি বলিলাম, “আঁ৷ খোকা, আমি পেটে আঙ্গুল দিয়ে মাছ খাওয়া ধরতে পারি, তা বুঝি জানতে না ?” এইরূপে যখন দেখিলাম। সে একেবারে ভয়-ভাঙ্গা হইয়াছে, তখন তার বইখানা খুলিয়া তার সম্মুখে রাখিয়া বলিলাম, “দেখ, তুমি খারাপ ছেলে, আর আমি ভাল ছেলে।” সে জিজ্ঞাসা করিল, “কেন ?” আমি উত্তর করিলাম, “আমি পড়তে পারি, তুমি পড়তে পার না ; এই দেখ আমি পড়ি।” এই বলিয়া ক খ গ ঘ করিয়া পড়িয়া চলিলাম। সে আমাকে পড়িতে দেয় না, বলিল “আমিও পড়িতে পারি।” আমি বলিলাম, “আচ্ছা! পড়া।” তখন সে জোরে জোরে ক খ গ ঘ করিয়া পড়িয়া চলিল । অবশেষে আমি তাহাকে সর্বনিম্ন শ্রেণীতে ( তাহার ক্লাসে) লইয়৷ গেলাম। গিয়া পণ্ডিত মহাশয়কে বলিলাম, “দেখুন, আপনি বলছিলেন, “ও “পড়’ বললেই কঁাদে, কিন্তু আমার কাছে ত বেশ পড়িল।” চাহিয়া দেখি, পণ্ডিত মহাশয়ের পার্শ্বে একগাছি চেন্টাল বঁাকারি রহিয়াছে ; কোনও ছেলে না পড়িলে বা অবাধ্য হইলে তাহার পৃষ্ঠে, বা তাহাকে চিত করিয়া শোয়াইয়া তাহার পেটে, ঐ বাকারি পড়ে। আমি বলিলাম, “ও বাকারি দেখলে ওর বাবা হয়ত কঁাদে, ও ত কঁাদবেই। ও বাকরি আপনাকে ফেলে দিতে হবে।” তিনি বলিলেন, “তা হ’লে আর পড়াশোনা হবে না।” আমি বলিলাম, “আচ্ছা দেখুন, আপনার সম্মুখেই আমি পড়াই।” এই বলিয়া স্কুলের চাকরকে বলিলাম, "একটা বড় মাদুর পেতে