পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত > [ ২য় পরিঃ ও এখানকার পাঠাদিতে ব্যস্ত হইলাম, তখন গ্রামে তাহার বিবাহ হইয়া গেল। সে দূরে শ্বশুর বাড়ী চলিয়া গেল। আর বহু বৎসর তাহার সহিত দেখা সাক্ষাৎ হয় নাই। পরে বড় হইয়া ব্রাহ্মসমাজে যোগ দেওয়ার পর গ্রামে গিয়া আবার তাহাকে দেখিলাম, দেখিয়া চমকিয়া উঠিলাম। সে প্রস্ফুটিত পুষ্পসম কান্তি বিলীন হইয়াছে, সন্তানভারে ও সংসারভারে সে অবসন্ন হইয়া পড়িয়াছে। তাহাকে দেখিয়া মনে যে ভাব হইয়াছিল তাহ “তুমি কি আমার সেই খেলার সঙ্গিনী ?” নামে একটি কবিতায় প্রকাশ করিয়াছি। আমার যত দূর স্মরণ হয়, আমার বন্ধু দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় সেই কবিতাটি জোর করিয়া কাড়িয়া লইয়া তীহার ‘অবলাবান্ধবোঁ ছাপিয়াছিলেন। আমি সেটিকে সংগ্রহ করিবার অনেক চেষ্টা করিয়াছিলাম, কিন্তু অবলাবান্ধবের পুরাতন ফাইল না পাওয়াতে পারি নাই। গাছে চড়া।—এই পঠদ্দশার স্মৃতি হৃদয়ে বড় মিষ্ট হইয়া রহিয়াছে। গ্রীষ্মের কয় মাস মার্নিং স্কুল হইত। আমি পাড়ার বালকদের সঙ্গে মিলিয়া অতি প্রত্যুষে উঠিয়া ফুল তুলিতে যাইতাম। কেঁচড় ভরিয়া ফুল লইয়া স্কুলে যাইতাম। জমিদার বাবুদের বাড়ীর সম্মুখে একটা চাপা গাছ ছিল, সেই গাছে চড়িয়া ফুল পাড়িতাম। আমি গাছে চড়িতে তত পরিপক ছিলাম না। কখনই ডাংপিটে ছেলে ছিলাম না । কিন্তু পাড়ার ডাংপিটে ছেলেরা আমাকে গাছে চড়িতে শিখাইতে ক্রটি কিরিত না। চড়িতে ভয় পাইলে ভীরু বলিয়া উপহাস করিত, সেটা প্রাণে সহিত না । গানের দলে দোহার - সে কালের আরও কয়েকটি কথা মনে আছে। এক বার পাড়াতে এক দিন রামায়ণ গান হইল। তাহা দেখিয়া পাড়ার ছেলেরা এক রামায়ণ গানের দল করিল। আমি গাইতে পারিতাম না, সুতরাং মূল গায়েন হইতে পারিলাম না। কিন্তু আমার উৎসাহে দলটি জমিয়া গেল। এক ছেলের গলায় একটা ঢোল, আর