পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিশিষ্ট ( ১ )-পিতা হরানন্দ ভট্টাচার্য্য আমার পুজনীয় পিতৃদেব হরানন্দ ভট্টাচার্য্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রিয়পাত্র ছিলেন। কেবল প্রিয়পাত্র নহে, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রকৃতির অনেক গুণ আঁহাতে ছিল। শুধু গুণ কেন, তঁাহার প্রকৃতির অনেক দোষও আমার পিতার প্রকৃতিতে ছিল । সেই তেজস্বিতা, সেই উৎকট ব্যক্তিত্ব, সেই অন্যায়ের প্রতি বিদ্বেষ, সেই আত্মমর্য্যাদা জ্ঞান, সেই পরদুঃখ কাতরতা, সকলি আমার পিতাতে ছিল ; আবার সেই স্বমতপ্রিয়তা, সেই ফলাফলের প্রতি দৃষ্টির অভাব, সেই আত্মপরীক্ষা ও আত্মসংশোধনের প্রয়াসাভাব, তাহাও ছিল। কিন্তু মানব কুলের মধ্যে কে আছে, যে দোষে গুণে জড়িত নয় ? আমার পিতার দোষ যাহা থাকে থাকুক ; ইহা নিশ্চিত কথা যে, শৈশব হইতে ঐ তেজস্বী অধর্ম্মবিদ্বেষী ও সত্যানুরাগী মানুষের শাসনাধীন না থাকিলে, আমার চরিত্র গঠিত হইত না । আমি আমার দীর্ঘ জীবনের পরীক্ষাতে এই দেখিলাম যে, কোনও গৃহস্থের গৃহের প্রাঙ্গণের চারি দিকে যদি প্রাচীর থাকে, এবং ঐ প্রাচীর যদি উচ্চ হয়, তবে গৃহের বালক বালিকা প্রাচীরের অপর পাশ্বের প্রতিবেশীর প্রাঙ্গণের আবর্জনা যেমন দেখিতে পায় না, সুখেই থাকে ; তেমনি, পিতামাতার চরিত্র। যদি, উচ্চ হয়, তাহাতে যদি সন্তানগণ পাপের প্রতি অকৃত্রিম ঘৃণা ও সাধুতার প্রতি আকৃত্রিম আদর দেখিতে পায়, তাহা হইলে সেই পিতৃচরিত্র এবং মাতৃচরিত্র উন্নত প্রাচীরের ন্যায় তাহাদিগকে ঘিরিয়া