পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s૧૦ শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত এ পরিা শ্বশুরালয়ের লোকের নিকটে শ্রবণ করিলেন। একটি নিরপরাধ বালিকার প্রতি এরূপ ব্যবহার করা অন্যায়াচরণ বলিয়া তাহার মনে হইতে লাগিল ; অথচ নিজেই বালক, জ্যেষ্ঠ সহোদরাকে ও ভগিনীপতিকে কিছু বলিতে লজ্জা বোধ করিতে লাগিলেন। এইরূপে কিছু সময় গেল। অবশেষে বাবার পক্ষে অসহনীয় বোধ হইল। তিনি রাগিয়া গেলেন, এবং যেরূপে হউক বালিকা পত্নীকে কারাগার হইতে উদ্ধার করিয়া তাহার পিতৃগৃহে আনিবেন, স্থির করিলেন । এই স্থির করিয়া এক বার কলেজের ছুটির সময় বাড়ীতে গেলেন। গিয়া মাকে ডুলি করিয়া নিজে সঙ্গে করিয়া মার পিত্রালয়ে আনিতে প্রস্তুত হইলেন। গ্রামে হুলস্থূল পড়িয়া গেল ; জ্ঞাতিগণ ভাঙ্গিয়া পড়িলেন ; বড় পিসী ও পিসা মহাশয় লজ্জায় ম্রিয়মাণ হইলেন, কারণ এক জন ১৫/১৬ বৎসরের বালকের পক্ষে এরূপ কার্য্যে প্রবৃত্ত হওয়া বড় লজ্জার কথা মনে হইতে লাগিল। কিন্তু বাবা কাহারও আপত্তির প্রতি কর্ণপাত করিলেন না । মার ডুলির সঙ্গে গ্রামে বাহির হইলেন, এবং জ্ঞাতিবর্গের বাড়ীর সম্মুখ দিয়া যাইবার সময় চীৎকার করিতে লাগিলেন, “কে আছ, বাহির হও । এই দেখ, আমার স্ত্রীকে আমি শ্বশুর বাড়ী লইয়া যাইতেছি।” আর একটি বিষয়ও এই তেজস্বিতা ও মনুষ্যত্বের দ্যোতক। অগ্রেই বলিয়াছি, বাবা কলেজে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রিয়পাত্র ছিলেন । মদনমোহন তর্কালঙ্কারের সহিতও তাহার আত্মীয়তা ছিল। উক্ত উভয় সদাশয় পুরুষের সঙ্গে মিশিয়া মিশিয়া স্ত্রীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে তাহার দৃঢ় প্রতীতি জন্মিয়াছিল। তদনুসারে তিনি ছুটির সময় ঘরে আসিলেই আমার মাতাঠাকুরাণীর শিক্ষকতা কার্য্যে নিযুক্ত হইতেন। মা ঘরের কােজ সারিয়া দশটা রাত্রে শয়ন করিতে আসিলে তঁহাকে পড়াইতে বসিতেন। মাও উৎসাহ সহকারে পড়িতেন। কলেজ খুলিলে বাবা মাকে পড়িবার জন্য বই দিয়া যাইতেন ; মা