পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sw8-69 পাখী ধরা ও পাখী পোষা } উপর ছাটগাছি বুলাইলেই ফড়িং লাফাইয়া উঠিত। অমনি সেই ছাট সজোরে তার পৃষ্ঠদেশে মারিয়া তাহাকে অৰ্দ্ধমৃতপ্রায় করিতাম। সেই অচৈতন্য অবস্থাতে তাহাকে এক বঁাশের কেঁড়ের মধ্যে পুরিতাম। এইরূপে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফড়িং ধরিতাম। ধরিয়া আনিয়া পাখীকে খাওয়াইতাম । পাখীর বাচ্ছা পোষা প্রায় বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে হইত। বাবা তখন ছুটিতে বাড়ীতে থাকিতেন। তিনি আমার পাখী পোষা দেখিতে পারিতেন না। পড়াশুনার ব্যাঘাত হয়, ইহা সহিতে পারিতেন না । পাখীর বাচ্ছাকে খাওয়াইতে দেখিলেই আমাকে মারিতেন । সুতরাং, তাহার অনুপস্থিতি কালে আমাকে ঐ বাচ্ছার মায়ের কাজ করিতে হইত। পিতার হস্তে এত প্রহার খাইয়াও কিরূপে আমি তাহাদিগকে পালন করিতাম, তাহা ভাবিলে আশ্চর্য্য বোধ হয়। মা আমার পাখী পোষার বড় বিরোধী ছিলেন না । বোধ হয় ছেলে বাড়ীতে থাকে এবং একটা কাজে ভুলিয়া থাকে, এই তঁর মনের ভাব ছিল। কিন্তু তঁাহারও পাখী পোষা সখা ছিল। আমি চলিয়া আসিবার পরও তিনি অনেক পাখী পুষিয়াছেন। আমি যে কেবল পাখীর বাচ্ছা পুষিতাম তাহা নহে, ধাড়ী পাখীও পুষিতাম । বড় পাখী ধরিবার তিন প্রকার কৌশল ছিল। প্রথম, আমাদের উঠানে একটি ধামা খাড়া করিয়া তাহার সম্মুখে চাল কড়াই ছড়াইয়া, ধামার পৃষ্ঠে একগাছি বঁাকারির অগ্রভাগ লাগাইয়া, অপর প্রান্ত দাবাতে লাগাইয়া অপেক্ষা করিয়া বসিয়া থাকিতাম। কোনও ঘুঘু, বা পায়রা বা । শালিক যেই আসিয়া একমনে চাল কড়াই খাইত, অমনি বাকারির দ্বারা ধামাটি ঠেলিয়া তাহাকে ধামা চাপা দিতাম। দ্বিতীয়, গাছের ডালে যখন পাখীতে পাখীতে ঝগড়া ও মারামারি করিত, তখন তাহার নীচে গিয়া কাপড়ের জাল পাতিতাম। তাহারা মারামারি করিবার সময় রাগে এমন অন্ধ হয় যে, দুজনে জড়ামড়ি করিয়া পাকা ফলটির মত গাছের