পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচরিত পর আমার প্রপিতামহ পূজ্যপাদ রামজয় ন্যায়ালঙ্কার মহাশয় এই ধাগদান ক্রিয়া সম্পন্ন করেন । 酋 বালিকা প্রসন্নময়ী বধু রূপে আমাদের গৃহে আসিয়া বড় অধিক সমাদরে গৃহীত হন নাই। জ্ঞানালোচনাতে ও সামাজিক অবস্থাতে হীন বলিয়া আমার শ্বশুর কুলের ব্যক্তিগণের প্রতি আমার পিতামাতার, বিশেষতঃ আমার পিতার, অবজ্ঞা ছিল। প্রসন্নময়ী সে গৃহের কন্যা, সুতরাং তিনিও কিয়ৎ পরিমাণে সেই অবজ্ঞার অংশী হইয়াছিলেন। তঁহার সকল কাজ কর্ম্মের মধ্যে আমার জনক জননী অজ্ঞ ও অশিক্ষিত বংশের পরিচয় পাইতেন। তঁহার বালিকা সুলভ সামান্য সামান্য ক্রটি সকলও গুরুতর অপরাধ বলিয়া পরিগণিত হইত। হিন্দু গৃহস্থের ঘরে বালিকা বধূকে শ্বশ্রী ও গুরুজনের সমক্ষে কিরূপ ভয়ে ভয়ে বাস করিতে হয়, তাহা অনেকে জানেন ; অতি অল্প বালিকাই সে পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হইতে পারে। এরূপ সকল দিক দেখিয়া চলা, সরল প্রকৃতির বালিকা প্রসন্নময়ীর বুদ্ধিতে কুলাইত না ; সুতরাং তিনি ত্বরায় পতিগৃহে বিরাগভাজন হইয়াছিলেন । আমি এখন এই সকল কথা বলিতেছি ; তখন বলি নাই। তখন আমিও বালক ছিলাম, সম্পূর্ণ রূপে গুরুজনের ও পরিবারস্থ ব্যক্তিগণের প্রভাবের অধীন ছিলাম। আমি তখন অধিকাংশ সময় কলিকাতায় থাকিতাম। গ্রীষ্ম ও পূজার ছুটিতে গৃহে যাইতাম ; তখন বালিকা পত্নীর সহিত সাক্ষাৎ হইত। কিন্তু তখন আমি অপরের চক্ষেই তেঁাহাকে দেখিতাম, এবং অনেক সময় গুরুজনের শাসনের উপরে শাসনের মাত্রা বদ্ধিত করিয়া প্রসন্নময়ীর জীবনকে বিষময় করিতাম। তাহা স্মরণ করিয়া পরে অনেক ক্ষোভ করিয়াছি। ” যাহা হউক, আমার বাল্যাবস্থা না ঘুচিতেই পিতৃকুল ও শ্বশুরকুল, উভয় কুলের মধ্যে বিবাদ পাকিয়া উঠিল। প্রসন্নময়ীকে আমাদের