পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [২য় পরিঃ আবার নিকটে ছটিয়া আসে, মুখের দিকে চায়, ডাকে, আবার দৌড়িয়া যায়, আবার দাঁড়ায়। শেষে বাবা বুঝিলেন যে আমাদিগকে সঙ্গে যাইতে বলিতেছে। তখন আমাদের দুই এজন বালককে সঙ্গে যাইতে আদেশ করিলেন। আমরা সঙ্গে গিয়া দেখি, এক জনেরা আমাদের গরু বাধিয়া রাখিয়াছে। তাহারা শেয়ালখাকীকে দেখিয়া বলিতে লাগিল, “ওরে, কুকুরটা আবার এসেছে ; নিজে মারি খেয়ে গিয়ে বাড়ীর লোক ডেকে এনেছে।” এই শেয়ালখাকীর ন্যায় আরও অনেক বার অনেক কুকুর পুষিয়াছি। প্রপিতামহ।—সর্বশেষে, আমার প্রপিতামতকে এই কালের মধ্যে যেরূপ দেখিয়াছিলাম, তাহার উল্লেখ করিয়া এই পরিচ্ছেদের উপসংহার করিতেছি। আমার স্মৃতিশক্তি যত দূর যায়, আমার জ্ঞানোদয় পর্যন্ত আমি তঁহাকে অন্ধ বধির ও বাড়ীর বাহিরে যাইতে অসমর্থ দেখিয়াছি। সে সময়ে বোধ হয় তঁাহার বয়স ৯৫ বৎসর ছিল। তিনি খর্বাকৃতি ও কৃশাঙ্গ মানুষ ছিলেন, সুতরাং তঁহাকে একটি বালকের মত দেখাইত। আমার মা তঁহার ধর্ম্মভাব ও সাধননিষ্ঠা দেখিয়া এমনি মুগ্ধ হইয়াছিলেন যে কুলগুরুর নিকট মন্ত্রদীক্ষার সঙ্কল্প ত্যাগ করিয়া তাঁহারই নিকট দীক্ষিত হইয়াছিলেন। তৎপরে কোলের শিশুটির ন্যায় তাহাকে হাতে ধরিয়া পালন করা আমার মার এক প্রধান কাজ হইয়া দাড়াইয়াছিল। প্রাতে উঠিয়া গলবস্ত্রে তীর চরণে প্রণত হইতেন ; তৎপরে ছোট শিশুটির ন্যায় তঁর কাপড় ছাড়াইয়া কাচা কাপড় পরাইয়া পূজার আসন ও কোশাকুশী দিয়া আঁহাকে পূজায় বসাইয়া দিতেন। বসাইয়া দিয়া নিজের গৃহকর্ম্মে যাইতেন। পুজা অন্তে আমি তার হাত ধরিয়া বসিবার আসনে বসাইয়া দিতাম। . . আমাদের বাড়ীর দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে একটি ছোট কোঠ-ঘর ছিল, তাহার এক অংশে প্রপিতামহ মহাশয় থাকিতেন, আর এক অংশে ঠাকুর