পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ২য় পরিঃ পেটুক ছেলে ।-পো অধ্যাপক ছিলেন, বাড়ীতে বসিয়া বিদায় আদায় যাহা উপাৰ্জন করিতেন তাহাতেই সুখে সংসার চালিত । "কখনও কখনও গ্রামের বিষয়ী লোকদিগের গৃহে ক্রিয়া কর্ম্ম হইলে, পো-র জন্য বিদায়ের ডালি আসিত। ডালির অর্থ, একখানি সরাতে একটু চিনি ও দশ বারটি সন্দেশ, তৎসহ একটি ঘড়া, কি একটি গাড়ু, কি কতকগুলি মুদ্রা। আমি বাহিরে খেলা করিতে করিতে যদি দেখিতাম যে ডালি আমাদের ভবনের অভিমুখেই যাইতেছে, তখনই সঙ্গ লইতাম । প্রপিতামহ মহাশয় বাহির বাড়ীর দিকে এক রকে বসিয়া জপ করিতেন । লোকে ডালিটি সন্মুখে রাখিয়া আঁহার হাত ধরিয়া ছুয়াইয়া দিত। তিনি বুঝিতেন যে ডালি আসিয়াছে। জিজ্ঞাসা করিতেন, “কার বাড়ী হ’তে ?” ডালি-বাহক চীৎকার করিয়া নামটা বলিয়া দিত। তখন পো আমাকে ডাকিতেন, “বাবা ” আমি আমনি ছোট ছোট অঙ্গুলিতে তঁহার গা ভূঁইয়া দিতাম ; ভাবিতাম, বেশী চেচাইলে মা শুনিতে পাইবেন। প্রপিতামহ বুঝিতেন, বাবা উপস্থিত। টাকাগুলি নিজের কাছে রাখিয়া বলিতেন, “এই সনেদশের সারা মাকে নিয়া দেও।” বাবা ত সরাখানি লইয়া একান্তে দাড়াইয়া অধিকাংশ সন্দেশ খাইলেন, শেষে রান্নাঘরের কাছে গিয়া বলিলেন, “মিত্রের বাড়ী থেকে ডালি এসেছিল, ঐ সে সরা” ; এই বলিয়া রান্নাঘরের দাবাতে সরাখানি রাখিয়াই দৌড়। মা রাগিয়া পো-র নিকট আসিয়া বাকবাকি করিতেন। বলিতেন, “আমাকে কি ডাকতে পার না ? বড় যে “বাবা” “বাবা’ কর, ঐ বাবা সব সন্দেশ খেয়ে ফেলেছে।” প্রপিতামহ মহাশয় শুনিয়া হাসিয়া উঠিতেন, “হাঃ হাঃ, বেশ করেছে, ওর জন্যই তা সব।” যখন সরাখানি আমার হাতে না পড়িয়া মায়ের হাতে পড়িত, তখন পো হাত দিয়া সন্দেশগুলি গণিয়া রাখিতেন। তার পর তীকে প্রতি দিন কয়টা করিয়া সন্দেশ দেওয়া হইত। তাহা গণিতেন। যদি দেখিতেন অধিকাংশ তাকে দেওয়া হইয়াছে, তাহা