পাতা:আত্মচরিত (৩য় সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

จ8 শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ ৩য় পরিঃ প্রায় আধা ঘণ্টা পরে চৈতন্য হইল। চৈতন্য লাভ করিয়া দেখি, উঠান হইতে তুলিয়া আমাকে ঘরের দাওয়াতে শোয়ান হইয়াছে, এবং দুই তিন জন লোক তপিন তেল দিয়া আমার গা মালিশ করিতেছে ; বাবা আপনি তেল জোগাইতেছেন ও তাহাদের সাহায্য করিতেছেন। আমি জাগিয়া “মা” “মা” করিয়া ডাকিতে লাগিলাম। শুনিলাম, তিনি আমাকে অচেতন হইয়া পড়িয়া যাইতে দেখিয়া, কঁাদিতে কঁাদিতে বাড়ীর নিকটস্থ জঙ্গলে গিয়া পড়িয়া আছেন। আমার চেতনা হইবামাত্র লোকে তঁহাকে আনিবার জন্য গেল। এক জনের পর আর এক জন গেল ; তিনি কাহারও কথাতে বিশ্বাস করিলেন না। অবশেষে পীড়াপীড়ি করাতে বলিলেন, “কৃষ্ণচরণ নাপিত যদি আসিয়া বলে যে ছেলে বেঁচে আছে, তুবে আমি যাব ; আর কারও কথাতে যাব না ।” এই কৃষ্ণচরণ নাপিত পাড়ার এক জন বৃদ্ধ দোকানদার ছিলেন। তিনি বড় ভক্ত ও ধর্ম্মভীরু মানুষ ছিলেন। পাড়ার লোকে তঁহাকে “ভক্ত কৃষ্ণচরণ’ বলিয়া ডাকিত। সেই রাত্রে কৃষ্ণচরণের নিকট লোক গেল। বুদ্ধ লাঠি ধরিয়া অতি কষ্টে আসিলেন, এবং আমার সহিত কথা কহিয়া মাকে ডাকিতে গেলেন। মা তঁর কথা শুনিয়া জঙ্গল হইতে উঠিয়া আসিলেন, এবং “বাবা রে, তুই কি আছিল ?” বলিয়া আমার শয্যাপাশ্বে পড়িয়া কঁাদিতে লাগিলেন । এদিকে, আমার যখন চেতনা হইল, তখন আমি আমার স্বভাবসিদ্ধ জেঠাম’ করিয়া বলিতে লাগিলাম, “আমি মেজ দাদার সঙ্গে ঝগড়া করেছিলাম, মারামারি করেছিলাম, দোষ হয়েছিল, সন্দেহ নাই। কিন্তু লঘু পাপে এত গুরু দণ্ড দেওয়া বাবার পক্ষে কি ভাল হয়েছে ? আমার স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ীর লোকেরা বাড়ীতে রয়েছে, পাশের বাড়ীতে কুটুমরা এসেছে, তাদের সমুখে এত মারা কি বাবার পক্ষে ভালু হ’ল ?” এই কথা বলিতে না বলিতে দেখিতে পাইলাম, বাবা অদূরে মাটিতে নাক ঘষিয়া নাকে