পাতা:আত্মচরিত (৪র্থ সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ot শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচবিত [ ১০ম পরিঃ কঠিন, আমার জীবনসংশয়, তখন তঁহাকে সংবাদ দেওয়া উচিত মনে করিলাম। রোগশয্যায় পড়িয়া তাহাকে পত্র লিখিলাম । পীড়ার সংবাদ দিয়া লিখিলাম, “যদি উচিত বিবেচনা করেন, আসিয়া দেখা দিয়া আমাকে পদধূলি দিয়া যাইবেন। তাহা না হইলে এই বিদায়, পরলোকে দেখা হইবে।” তৎপূর্বে বাবা আমার চিঠিপত্র খুলিতেন না, ও উপরে আমার হস্তাক্ষর দেখিলে ছিড়িয়া ফেলিতেন। এ পত্র যে কোন পড়িলেন, বলিতে পারি না। অনুমান করি, লোকমুখে অগ্রেই আমার পীড়ার সংবাদ পাইয়াছিলেন। যাহা হউক, একদিন প্রাতে আমার ভবনের দ্বারে একখানি গাড়ি আসিয়া লাগিল। প্রসন্নময়ী জানালা হইতে দেখিয়া দৌড়িয়া আসিয়া আমাকে সংবাদ দিলেন, “বাবা ও মা আসিয়াছেন।” মা উপরে আসিলেন, কিন্তু বাবা আর সে ভবনে প্রবেশ করিলেন না । মা আমার রোগশয্যার পার্থে আসিয়া কঁদিয়া বসিয়া পড়িলেন। “বাবা আসিলেন না কেন ?” জিজ্ঞাসা করাতে বলিলেন, তিনি কবিরাজ ডাকিতে গিয়াছেন। অনুসন্ধানে জানিলাম, বাবা আমার চিঠি পাইয়া মায়ের গহনা বন্ধক দিয়া টাকা লইয়া আমার চিকিৎসার জন্য আসিয়াছেন। বাড়ীতে প্রবেশ করিবেন। না ; আমার জ্ঞাতি-দাদা হেমচন্দ্র বিদ্যারত্ন মহাশয়ের বাসাতে থাকিয়া আমার চিকিৎসা করাইবেন । যথাসময়ে কবিরাজ আসিলেন । বাবা তাহাকে আমার ভবনে প্রবেশ করাইয়া দিয়া নিজে পথপার্থে দোকানে বসিয়া রহিলেন। কবিরাজ আমাকে দেখিয়া গেলে তাহার মুখে সমুদয় শুনিলেন। তাহার এই ব্যবহারে আমার চক্ষে কত জল পড়িল। তৎপুর্বে এই আট বৎসর সংসারের আপদ বিপদে জ্ঞাতসারে আমার এক পয়সাও সাহায্য লন নাই। পরন্তু যদি কখনও জানিতে পারিয়াছেন যে, মায়ের হাত দিয়া গোপনে কিছু অর্থসাহায্য করিতে চাহিতেছি, তখন তুমুল