পাতা:আত্মচরিত (৪র্থ সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 R শিবনাথ শাস্ত্রীৰ আত্মচবিত [ ২২শ পরিঃ ব্রাহ্মবালিকা-শিক্ষালয় -ইংলণ্ড হইতে ফিরিয়া আসিয়া আমি যে কয়েকটী কার্য্যের সূত্রপাত করিয়াছিলাম, তাহার মধ্যে একটি ব্রাহ্মবালিকা-শিক্ষালয় স্থাপন। অগ্রেই বলিয়াছি যে আমি ইংলেণ্ডে বাসকালে কিণ্ডারগার্টেন স্কুল দেখিয়াছিলাম, এবং শিক্ষাবিষয়ক কতকগুলি গ্রন্থও কিনিয়া আনিয়াছিলাম। সেইগুলি পাঠ করিয়া শিক্ষা সম্বন্ধে কতকগুলি নুতন চিন্তা আমার মনে উদয় হয়। ব্রাহ্মবালিকা-শিক্ষালয় স্থাপন তাহারই ফল । শিক্ষা প্রণালীর সংস্কাব সম্বন্ধে বহুকাল পূর্বের চিন্তা ও অভিজ্ঞতা - এ জাতীয় চিন্তা বহুদিন হইতেই আমার মনে ছিল । আমি যখন বি-এ ক্লাসে পড়ি, তখন একটী বিশেষ ঘটনাতে শিক্ষাসম্বন্ধীয় নূতন চিন্তা আমার মনে প্রবেশ করে। সে ঘটনাটী এই। একবার গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ীতে গেলে বাবা আমাকে প্রতিনিধি দিয়া তাহার শিক্ষকতাকার্য্য হইতে কিছুদিনের জন্য অবসর গ্রহণ করেন। একদিন আমি দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়াইতেছি, এমন সময় সর্বনিম্ন শ্রেণীর পণ্ডিত মহাশয় একটী চারি কি পাঁচ বৎসরের বালককে লইয়া ঐ দ্বিতীয় শ্রেণীতে আমার নিকট উপস্থিত হইলেন। আসিয়া বলিলেন, “মহাশয়, এই ছেলেটকে “পড়’ বলিলেই কঁদে ; কি করি ?” আর বাস্তবিক দেখিলাম, ছেলেটার দুই চক্ষের দুইটী অশ্রুধারা পড়িয়া পেটের উপর দিয়া বহিয়া গিয়াছে, তায় চিহ্ন রহিয়াছে। আমার বড় আশ্চর্য্য বোধ হইল ; বলিলাম, “পড় বললেই কঁদে ? আচ্ছ, ওকে আমার নিকট দিয়ে যান, আমি দেখি।” তিনি ছেলেটকে আমার নিকট দিয়া গেলেন। আমি তাহাকে বলিলাম, “তুমি আমার হাত ধরে আমার সঙ্গে বেড়াও তাঁ।” সে আমার হাত ধরিয়া বেড়াইতে লাগিল। আমার যখন মনে হইল যে বেড়াইতে বেড়াইতে সে ভয়-ভাজা হইয়াছে, তখন তাহাকে তুলিয়া বেঞ্চের উপরে বসাইলাম। বসাইরা নিজের অঙ্গুলি