পাতা:আত্মচরিত (৪র্থ সংস্করণ) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8为° শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচারিত [ পরিা যাইত; অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ করিতেন। বলিতে কি, তিনি ট্রেনে, যে-কামরাতে থাকিতেন, সেই সময়ের জন্য সে-কামরার হাওয়া যেন উন্নত ভাব ধারণ কিরিত । কর্ত্তব্যকার্যে র্তাহার এমনি গাঢ় অভিনিবেশ ও চিত্তের এরূপ অদ্ভুত একাগ্রতা দেখিতাম যে, তিনি যখন বাড়ীতে থাকিতেন, তখন দেখিলে মনে হইত। যে সোমপ্রকাশ লেখা ভিন্ন তাঁহার পৃথিবীতে অন্য কার্য্য নাই ; আবার কলেজে গিয়া যখন বসিতেন, তখন দেখিলে মনে হইত। যে কলেজে পড়ান ছাড়া তাহার। পৃথিবীতে অষ্ঠ কার্য্য নাই । বাস্তবিক তিনি যে-কাজটা একবার কর্ত্তব্য বলিয়া ধরিতেন, তাহ সমগ্র হৃদয়ের সহিত ধরিতেন ; ক্ষতিকে ক্ষতি বলিয়া জ্ঞান করিতেন না, এবং সে-কার্য্য উদ্ধার না করিয়া ছাডিতেন না। ইহার দুই একটা দৃষ্টান্ত উল্লেখ করিতেছি। একবার তিনি একদিন প্রাতে প্রাতঃকৃত্য সমাপন করিয়া আসিতেছেন, এমন সময়ে গোপজাতীয়া একটী বিধবা যুবতী কঁদিতে কঁাদিতে সেই পথ দিয়া চলিয়াছে। বড় মামা তাহার ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞাসা করাতে সে বলিল যে, গ্রামের একজন ধনী লোক তাহাকে দাসী করিয়া বাড়ীতে রাখে ; সেই অবস্থাতে তাহাকে প্রলোভন দেখাইয়া বিপথে লইয়া যায় ; এবং তৎপরে তাহাকে সসত্ত্বা দেখিয়া তাড়াইয়া দিয়াছে। সে তখন নিরূপায়। শুনিয়া বড় মামার ক্রোধাগ্নি জ্বলিয়া উঠিল। তিনি প্রথমে সেই ধনীর নিকটে লোক পঠাইয়া ঐ হতভাগিনীর ভরণ-পোষণের উপযুক্ত অর্থসংগ্রহ করিবার চেষ্টা করিলেন। তাহান্তে অকৃতকার্য হইয়া রাজত্বারে অভিযোগ উপস্থিত করিলেন ; নিজে ব্যয় দিয়া মোকদ্দমা চালাইবার যোগাড় করিলেন । এই অবস্থাতে বোধ হয় ঐ ধনী ব্যক্তি । সেই স্ত্রীলোককে যাবজীবন মাসে ৪২ টাকা করিয়া দিতে রাজি হইল। তৎপরে বিধবার গর্ভের সন্তানটী যাহাতে নষ্ট না হয়, মামা তাহার উপায় করিলেন, এবং মাতা পুত্রের রক্ষার বন্দোৱন্ত করিয়া দিলেন ।