পাতা:আত্মজীবনী ও স্মৃতি-তর্পন - জলধর সেন.pdf/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

A e o আত্মজীবনী v3 স্মৃতি-তৰ্পণ সে সময় ময়মনসিংহ জেলার সন্তোষের খ্যাতনামা কবি জমিদার শ্রীযুক্ত প্রমথনাথ রায়চৌধুরী এবং তঁহার ভ্রাতা শ্রীযুক্ত মন্মথনাথ রায়চৌধুরী (এখন স্যার মহারাজা) কলিকাতায় বাস করতেন। তঁরা তখন তাদের বীডন ষ্ট্রীটের বাড়ীতে থাকতেন। বড় ভাই প্রমথবাবু কবি ও সাহিত্যিক, ছোট ভাই মন্মথবাবু তখন সাহিত্যিক এবং রাজনীতি-ক্ষেত্রে সুপরিচিত দেশপূজ্য সুবেন্দ্রনাথের উপযুক্ত শিষ্য। তাদের বীডন ষ্ট্রীটের বাড়ীতে এক বৈঠকখানায় সাহিত্যিকদের বৈঠক বসত -সেখানে রবীন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রলাল, দেবকুমার প্রমুখ বড় বড় কবি ও সাহিত্যিক প্রতিদিন আডিডা দিতে ন-নানা বিষয়ের আলোচনা হত। আর সেই প্রশস্ত অট্টালিকার আর এক প্রান্তে মন্মথবাবুর মজলিস বসত। সেখানে প্রায় প্রতিদিন রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রের নেতৃস্থানীয় মহোদয়গণের আগমন হ’ত, রাজনীতি সম্বন্ধে বিপুল আলোচনা হ’ত। আজ যে মহারাজা স্তার মন্মথনাথ রায়চৌধুরী খ্যাতনামা রাজনীতিক ও সুবক্তা, এর সুচনা সেই বৈঠকেই হয়েছিল। মহারাজা স্যার মন্মথনাথ তখন থেকেই ইংরাজী ভাষায় একজন সুবক্তা বলে পরিচিত হয়েছিলেন। আমার এই দুই মজলিশে মিশবারই ছাড়-পত্র ছিল । সাহিত্যসেবা করতাম বলে প্রমথনাথের আসরে স্থান পেতাম, আবার সংবাদপত্রের সম্পাদক বলে মন্মথনাথের মজলিসেও আমার প্রবেশাধিকার ছিল ; আমি দুই মজলিসেই সমভাবে যোগ দিতাম ; দুই-ভাই-ই আমাকে যথেষ্ট স্নেহই বলুন আর অনুগ্রহই বলুন-করতেন। তাতে আমার এই সুবিধা হয়েছিল যে কোন মজলিসেন্ট চা জলযোগ বা সাময়িক ভোজনে আমাকে বঞ্চিত হতে হােতো না। এত কথা বলবার উদ্দেশ্য এই যে আমি যে আর ‘হিতবাদী’র সঙ্গে পেরে উঠছিনে এ সম্বন্ধে প্রমথনাথ ও মন্মথনাথ এই দুই ভাইয়ের সঙ্গে অনেক দিন আমাব আলোচনা হয়েছিল। সেই আলোচনার ফল এই হ’ল যে একদিন প্রমথবাবু আমাকে বললেন-দেখুন জলধরবাবু, আমি সুদীর্ঘকালের জন্য কলিকাতা ছেড়ে দেশে যাব। আমি বলি কি-আপনি অবিলম্বে ‘হিতবাদী’র কাব্য ছেড়ে দিনআমার সঙ্গে সন্তোষে চলুন। সেখানে আমার ছেলে ও মেয়ের ( ছোট ছেলে তখনো জন্ম গ্রহণ করেন নি), অভিভাবক ও শিক্ষক হবেন। আমার সঙ্গে থাকবেন। আমি আপনার সঙ্গে বন্ধুর মত ব্যবহার করব। সন্তোষে আপনার কোন খরচপত্র লাগবে না, সবই আমি বহন করব। আপনি মাসিক দেড়শো