পাতা:আত্মপরিচয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নবীন প্রভাত লাগি  দীর্ঘরাত্রি র’ব জাগি―
দীপ নিবিবে না।
কর্মভার নবপ্রাতে  নবসেবকের হাতে
করি যাব দান,
মাের শেষ কণ্ঠস্বরে  যাইব ঘােষণা করে
তােমার আহ্বান।

 আমার ধর্ম আমার উপচেতন-লােকের অন্ধকারের ভিতর থেকে ক্রমে ক্রমে চেতন-লােকের আলােতে যে উঠে আসছে এই লেখাগুলি তারই স্পষ্ট ও অস্পষ্ট পায়ের চিহ্ন। সে চিহ্ন দেখলে বােঝা যায় যে, পথ সে চেনে না এবং সে জানে না ঠিক কোন্ দিকে সে যাচ্ছে। পথটা সংসারের কি অতিসংসারের তাও সে বােঝে নি। যাকে দেখতে পাচ্ছে তাকে নাম দিতে পারছে না, তাকে নানা নামে ডাকছে। যে লক্ষ্য মনে রেখে সে পা ফেলছিল বার বার, হঠাৎ আশ্চর্য হয়ে দেখছে, আর-একটা দিকে কে তাকে নিয়ে চলছে।

পদে পদে তুমি ভুলাইলে দিক,
কোথা যাব আজি নাহি পাই ঠিক,
ক্লান্তহৃদয় ভ্রান্ত পথিক
এসেছি নূতন দেশে।
কখনাে উদার গিরির শিখরে
তবু বেদনার তমােগহ্বরে
চিনি না যে পথ সে পথের ’পরে
চলেছি পাগল বেশে।

 এই আবছায়া রাস্তায় চলতে চলতে যে একটি বােধ কবির সামনে ক্ষণে ক্ষণে চমক দিচ্ছিল তার কথা তখনকার একটা চিঠিতে আছে, সেই চিঠির দুই-এক অংশ তুলে দিই—

৫২