পাতা:আদরিণী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয়পরিচ্ছেদ।

 বলিতে বলিতে ইংরাজ প্রহরী জর্জ যম দূতের ন্যায় তিনকড়ির হস্ত ধরিয়া বাহিরে লইয়া গেল, উহাদিগকে আর দেখা গেলনা, কেবল স্ত্রীলোকের কণ্ঠনিঃসৃত ক্রন্দন ধ্বনি শ্রবণগোচর হইতে লাগিল, তাও অল্প সময়ের নিমিত্ত; ক্রমেক্রমে উহা বাতাসে মিশিয়া গেল।


তৃতীয় পরিচ্ছেদ।

 তিনকড়ি কলিকাতা হইতে আলিপুরের জেলে আবদ্ধ হইল—সহচর কেহ নাই, দু:খের সহচর কান্না— সুতরাং জেগে তাহারই সহচরী হইয়া দিন যাপন করিতে লাগিল, কেবা তাহার দুঃখের প্রতি কটাক্ষ পাত করে—কে তাহার ক্রন্দন ধ্বনি শ্রবণ করে— আর কেইবা তাহাকে সদুপদেশ প্রদান করে? পাঠক,—তিনকড়ির এত কান্না, এত দুঃখ কেন? তবেকি জেলে গিয়াছে, বলিয়াই অসহনীয় কষ্ট হইয়াছে? বস্তাবিক তাহা নহে; তাহার সেই সোণাৱ পুতুল হরিদাসী নিঃসহায় বলিয়াই আজ তার চক্ষে আর জলের স্থান হইতেছে না,—বর্যার বারিধারার ন্যায় দর দর করিয়া পড়িতেছে, সে নিজের জন্য যত চিন্তা না করিতেছে, হরিদাসীর জন্য তাহার চিন্তা ক্রমেই প্রবল হইতেছে, মন ব্যাকুলিত হইয়া উঠিয়াছে, —একে হরিদাসী অনাথ অসহায় বালিকা,