পাতা:আদর্শ হিন্দু হোটেল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&00 আদশ হিন্দী-হোটেল মাদী দঃখিত সরে বলিল-আহা! সে চাকরী নেই? তবে এখন কিহাজারি বসিয়া তাহার হোটেলের ইতিহাস আনপিনবিক বর্ণনা করিল। দোকানী পাকা ব্যবসাদার, ইহার কাছে। এ গলপ করিয়া সখি আছে, ব্যবস, ' কাহাকে বলে এ বোঝে। তাহাকে অন্য চোখেই দেখিতে আরম্ভ করিয়াছে, সম্পন্দ্রমের সহিত বলিলঠাকুরমশাই, রাত হয়েছে, রসায়ের জোগাড় করে দিই। তবে একটা কথh আমার দোকানের জিনিসপত্তরের দােম এক পয়সা দিতে পারবেন না।-- -সে কি কথা! --না ঠাকুরমশাই, এখন তো পথ-চলতি খন্দের নন, আমারই মত ব্যবসাদার, বন্ধ লোক। আমার দোকানে দয়া করে পায়ের ধলো দিয়েছেন, আমার যা জোটে, দটি বিন্দরের খন্দ খেয়ে যান। আবার রাণাঘাটে যখন আপনার হোটেলে যাব, তখন আপনি আমায় খাওয়াবেন। হাজারি জানে এ অঞ্চলের এই রকমই নিয়ম বটে। ব্যবসাদার লোকদের পরস্পরের মধ্যে যথেস্ট সহানভূতি ও খাতির এখনও এই সব পাড়াগাঁ অঞ্চলে আছে। রাণাঘাটের মত শহর জায়গায় রেষারেষির আবহাওঠায় উহ! নন্ট হইয়া গিয়াছে। রাত্রে দোকানী বেশ ভাল খাওয়া-দাওয়ার জোগাড় করিয়া দিল। ঘি ময়দা আনিয়া দিল, লাচি ভাজিয়া খাইতে হইবে, হাজারির কোনো আপত্তিই টিকিল না। ছোট একটা রই মাছ কোথা হইতে আনিয়া হাজির করিল। টাটকা পটল, বেগন, প্রায় অধিসের ঘন দধি, বেলের বাজারে উৎকৃষ্ট কাঁচা গোল্লা সন্দেশ । হাজারি দস্তুরমত লডিজত ও অপ্রতিভ হইয়া পড়িল। এমন জানিলে সে এখানে আসিত না। মিছামিছি বেচারির দন্ড করা অথচ সে কথা বলিতে গেলে লোকটি মহা দঃখিত হইবে। এই ধরনের নিঃস্বার্থ আতিথেয়তা শহরবাজারে হাজারির চোখে পড়ে নাই--এই সব পল্লী-অঞ্চলেই এখনও ইহা আছে, হয়তো দা-দশ বছর পরে আর থাকিবে না।