পাতা:আদর্শ হিন্দু হোটেল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

দশ হিহােটেল হাজারি ভাবিল, একবার সে বলে, যে রান্নার কাজ পক্ষ ঝিয়ের কাছে তাহাকে শিখিতে হইবে না, লুচি দুবাইলে কড়া কি নরম হয় সে ভালই জানে, কিন্তু তখনই সে বুঝিল, পল্ম ঝি কেন একথা বলিতেছে। ঘি হইতে জলতি বাদে যাহা বাকী থাকিবে পদ্মা ঝিয়ের লাভ। সে বাড়ী লইয়া যাইবে লাইয়া। কতমশায় পক্ষ ঝিয়ের বেলায় অধ। দেখিয়াও দেখেন না। হাজারি ভাবিল। এই সব জুয়াচুরির জন্যে হােটেলের দুর্নাম হয়। খদ্দেরে পয়সা দেবে, তারা কাঁচা লুচি খাবে কেন ? পুরাে ঘিয়ের দাম তো তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে, তবে তা থেকে বাঁচাননাই বা কেন? তাদের জিনিসটা যাতে ভাল হয়, তাই তাে দেখতে হবে। পম ঝি বাড়ী নিয়ে যাবে বলে তারা অত ঘিয়ের ব্যবস্থা করে নি। | পরক্ষণেই তাহার নিজের স্বপ্নে সে ডাের হইয়া গেল। এই রেল-বাজারেই সে হােটেল খুলিবে। তাহার নিজের হােটেল। কি কাহাকে বলে, তাহার মধ্যে থাকিবে না। খদ্দের যে জিনিসের অর্ডার দিবে, তাহার মধ্যে চুরি সে করিবে না। খন্দের সন্তুষ্ট করিয়া ব্যবসা। নিজের হাতে বাঁধিবে, খাওয়াইয়া সকলকে সন্তুষ্ট রাখিবে। চুরি-জােচুরির মধ্যে সে নাই। ' | লুচি ভাজা ঘিয়ের বুদ্ধদের মধ্যে হাজারি ঠাকুর যেন সেই ভবিষ্যৎ হােটেলের ছবি দেখিতে পাইতেছে। প্রত্যেক ঘিয়ের বুদটাতে। পশ্ন কি সেখানে নাই, বেচু চক্কত্তির গাঁজাখাের ও মাতাল শালাও নাই। বাহিরে গদির ঘরে দিব্যি ফর্সা বিছানা পাতা, ধন্দের যতক্ষণ ইচ্ছা বিশ্রাম করুক, তামাক খাইতে ইচ্ছা করে খাক, বাড়তি পয়সা আর একটিও দিতে হইবে না। দুইটা করিয়া মাছ, হপ্তায় তিন দিন মাংস বাধা-খদ্দেরদের। এসব না করিয়া শুধ, ইষ্টিশনের লাটফর্মে—হি-ই-ই-দ, হােটেল, হিই-ই হােটেল, বলিয়া মতি চাকরের মত চেচাইয়া গলা ফাটাইলে কি খদ্দের ভিড়িবে? পক্ষ ঝি আসিয়া বলিল—ও ঠাকুর, তােমার হােল? হাত চালিয়ে নিতে পাকনা বাবুদের নােক যে বসে আছে।