পাতা:আদর্শ হিন্দু হোটেল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দী-হোটেল S. ভাত তরকারি কিছু মাপ থাকে না যে কম পড়িবে। সতরাং কে ধরিতেছে ? কেন? এ ধরনের চুরি ধরিবার কি উপায় নাই কোনো ? কয়দিন ধরিয়া হাজারি চাণীর ঘাটে নিজনে বসিয়া শােধ এই কথা ভাবে। ঠাকুরে ঠাকুরে ষড়যন্ত্র করিয়া যদি বাহিরের লোক ঢাকাইয়া খাওয়ায়, তবে সে চুরি ধরিবার উপায় কি ? অনেক ভাবিয়া একটা উপায় তাহার মাথায় আসিল একদিন বিকালে। থালায় নম্বর যদি দেওয়া থাকে, আর টিকিটের নম্বরের সঙ্গে যদি তার মিল থাকে, তবে থালা এটো হইলেই ধরা পড়িবে অমক নম্বরের খন্দের বিনা টিকিটে খাইয়াছে’-না পয়সা দিয়া খাইয়াছে। মাঝে মাঝে তদারক করিলেই জিনিসটা ধরা পড়িবে। তা-ছাড়া থালা মজিবার সময় ঝি বা চাকরের নিকট হইতে এটো থালার নম্বরগলি জানিয়া লাইলেই হইবে। হাজারি খাব খাশি হইল। ঠিক বাহির করিয়াছে বটে-একটা ফাঁক অবিশ্যি আছে, সেও জানে-যদি কলাপাতায় খাইতে দেওয়া হয়। যদি বিনা” নম্বরী থালা সেই লোকটা বাহির হইতে আনে-তাহাতে নিস্তার নাই, কারণ " ঝি-চাকরের চোখে তখনই ধরা পড়িবে। এটাে থালা সেই লোকটা কিছ মাজিতে বসিতে পারে না হোটেলের মধ্যেই। কলার পাতায় কেহ খাইতেছে, ইহা চোখে পড়িলে তখনি ঝি-চাকরে সন্দেহ করবে বলিয়া হঠাৎ কেহ সাহস করিবে না কাহাকেও পাতায় ভাত দিতে। দশো-আড়াইশো টাকা। যদি যোগাড় করা যায়, তবে এই রেলবাজারেই আপাততঃ হোটেল খালিয়া দেওয়া যায়। টাকা দেয় কে ? যতীশ ভাটােচজের কথা তাহার মনে পড়িল। বেচারী বড় কমেট পড়িয়াছে। শেষে কিনা ভায়রাভাইয়ের বাড়ী চুলিতেছে আশ্রয় প্রার্থনা করিতে! লোকে কি সোজা কষ্ট পাইলে তবে কুটিবস্থানে যায়। চাকুরীর উমেদার হইয়া। যদি সে হোটেল খোলে, যতীশ ভাটােচাজকে আনিয়া রাখিবো। বদ্ধ মানষি, দটি করিয়া খাইতে পরিবে। আর কিছু হাত-খরচ মিলিবে। ইহার বেশী তাহার। আর কিসেরই বা দরকার।