পাতা:আদায়ের ইতিহাস - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 8 VCRS উপসংহার করিলেন, তবে লোকটা সত্যি ধামিক । মন্দির দেখলেই আধঘণ্টা ধরে প্রণাম করে।” । ত্রিষ্টপ বলিল, “আর প্রার্থনা করে, আমার মাইনে বাড়ুক ? অবিনাশ আশ্চর্য হইয়া বলিলেন, সে তো সবাই করে ।” বিধুর চায়ের দোকানে মণীশ বসিয়াছিল। সূর্য চোখের আড়ালে চলিয়া গিয়াছে ; কিন্তু তখনও সন্ধ্যা হয় নাই। এত আগে মণীশ কখনও বিধুর চায়ের দোকানে আসে না। ত্রিষ্টুপ বলিল, “তুমি এগােও বাবা, আমি আসছি।” চায়ের দোকানে ঢুকিতে যাইতেছে দেখিয়া অবিনাশ শঙ্কিত হইয়া বলিলেন, “খালি পেটে চা খেও না তিষ্ট।” ত্রিষ্টপ মাথা নাড়িয়া ভিতরে চলিয়া গেল । মণীশ জিজ্ঞাসা করিল, “কেমন লাগল। তিষ্ট? ত্রিষ্টপ বলিল, “কেমন যেন লাগল, মনিদা ।” “কেমন লাগল বুঝতে পারিছ না ? তার মানে ভালও লাগেনি, খারাপ ও লাগেনি ।” সব যেন কেমন খাপছাড়া মনে হল ।” মণীশ মাথা হেলাইয়া সায় দিয়া বলিল, “বোস, চা খাও।” খ্রিষ্টপ দ্বিধাভরে বলিল, “খালি পেটে—“ মণীশ হাসিল, “পেট খালি থাকবে কেন ? চপ খাও কাটলেট খাও, টেস্ট খাও,-বাড়ীর খাবার না হলে কি তোমার পেট ভরে না ?” মণীশের কাছে চিরদিন নিজেকে ত্রিছুপের ছেলেমানুষ মনে হয়, আজ আরও বেশী মনে হইতে লাগিল । একটু শ্রান্তিও সে বোধ করিতেছিল, শারীরিক নয়, মানসিক শ্রান্তি । সন্ধি হইয়া গিয়াছে, তবু সকালবেলায় লড়াই-এর জের যেন এখনও মেটে নাই, কেবলি মনে হইতেছে, সে যেন সন্ধি করিয়াছে হার মানার ভয়ে। কেমন একটা অনির্দিষ্ট ভাবে নিজেকে অপরাধী মনে করিতেছে।