আদিশূর [চতুর্থ অঙ্ক ।
আদিশূর। অভাগিনী সেই দিন হ’তে আর ওঠে নাই!
অনাদির ছিন্ন মুণ্ড লইয়া রক্তাক্ত-কলেবরে কীর্তন প্রবেশ করিল।
কীর্তন। মহারাজের একজন ভক্ত প্রজা বর্ণে বর্ণে তাঁর আদেশ পালন করেছে। গ্রহণ করুন রাজপুজা, ধরুন পদপ্রান্তে আমার রাজভক্তির নিদর্শন, দেখুন আপনার আদিষ্ট সেই অনাদিসেনের ছিন্ন মুণ্ড। [আদিশূরের পদতলে মুণ্ড রাখিল।]
আদিশূর। [শিহরিয়া উঠিয়া বলিলেন] অনাদির ছিন্ন মুণ্ড! এ্যাঁ! তাই তো বটে! সেই আকর্ণবিশ্রান্ত চক্ষু, সেই সুদীর্ঘ নাসা, সেই সরস রক্তিম অধরপুট এখনও হাসছে। ও-হো-হো, ভাই! ভাই! [স্নেহের তাড়নায় ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন, পরে আত্মসম্বরণ করিয়া দৃঢ়স্বরে বলিলেন] না, আদেশ দিয়েছি; বল, তুমি কি পুরস্কার চাও?
কীর্তন। অন্য কিছু চাই না, আমি বৌদ্ধধর্মাবলম্বী, রাজসভায় বৌদ্ধদের যে পুরস্কার হচ্ছে, আমিও তাই চাই ।
আদিশূর। তুমি বৌদ্ধধর্মাবলম্বী! বা-বা-বা! তবে ও পুরস্কার তোমার চাইতে হবে কেন? ও তো তোমার আছেই, তা ছাড়া তুমি আমার আদেশ পালন করেছ—রাজভক্তি দেখিয়েছ—আমার এক রক্তজাত ভাইকে হত্যা করেছ, তুমি যে পুরস্কার প্রার্থনা করেছ, তা হ'তেও উচ্চ পুরস্কার দেওয়া আমার উচিত। প্রহরী!
প্রহরী প্রবেশপূর্বক অভিবাদন করিল।
আদিশূর। একে নিয়ে যাও, জল্লাদকে বল, অস্ত্রাঘাতে নয়— একে কুকুর দিয়ে খাওয়াতে। [ ১৬৬ ]