পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

পাঁচ সকালবেলা স্নান করিয়া সত্য ধীরে ধীরে বাসায় ফিরিয়াছিল। তাহার দৃষ্টি ক্লান্ত, সজল। চোখের পাতা তখনও অর্জি। আজ চারদিন গত হইয়াছে, সেই অপরিচিতা প্রিয়তমাকে সে দেখিতে পায় নাই—আর তিনি গঙ্গাস্নানে আসেন না। আকাশ-পাতাল কত কি যে এই কয়দিন সে ভাবিয়াছে, তাহার সমা নাই । মাঝে মাঝে এ দুশ্চিন্তাও মনে উঠিয়াছে, হয়ত তিনি বঁচিয়াই নাই, হয়ত বা মৃত্যুশয্যায় ! কে জানে! সে গলিটা জানে বটে, কিন্তু আর কিছু চেনে না। কাহার বাড়ি, কোথায় বাড়ি, কিছুই জানে না। মনে করিলে অনুশােচনায় আত্মগ্লানিতে হৃদয় দগ্ধ হইয়া যায়। কেন সে সেদিন যায় নাই, কেন সেই সনিবন্ধ অনুরােধ উপেক্ষা করিয়াছিল ? সে যথার্থই ভালবাসিয়াছিল। চোখের নেশা নহে, হৃদয়ের গভীর তৃষ্ণা। ইহাতে ছলনাকাপট্যের ছায়ামাত্র ছিল না, যাহা ছিল - তাহ। সত্যই নিঃস্বার্থ, সত্যই পবিত্র বুকজোড়া স্নেহ। বাবু! সত্য চমকিয়া চাহিয়া দেখিল, তাহার সেই দাসী যে সঙ্গে আসিত, পথেব ধারে দাড়াইয়া আছে। সত্য ব্যস্ত হইয়া কাছে আসিয়া ভারী গলায় কহিল, কি হয়েছে তার। <লিয়াই তাহার চোখে জল আসিয়া পড়িল-সামলাইতে পারিল না। দাসী মুখ নীচু করিয়া হাসি গােপন করিল, বােধ করি হাসিয়া ফেলিবার ভয়েই মুখ নীচু করিয়াই বলিল, দিদিমণির বড় অসুখ, আপনাকে দেখতে চাইছেন। ১৩