পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

যাইত! যখন দুগ্ধপানের নিমিত্ত গৃহিণীর সহিত সুরাে দ্বন্দ্বযুদ্ধ করিত, যখন মা অনেক অযথা বচসা করিয়াও এই ক্ষুদ্র কন্যাটিকে স্বমতে আনিতে পারিতেন না এবং দুগ্ধ-পানের বিশেষ আবশ্যকতা ও তাহার অভাবে কন্যারত্নের আশু প্রাণবিয়ােগের আশঙ্কায় শঙ্কাষিত হইয়া বিষম ক্রোধে সুরবালার গণ্ডদ্বয়বিশেষ টিপিয়া ধরিয়া তাহাকে দুধ খাওয়াইতে পারিতেন না, তখনও হরিচরণের কথায় অনেক ফল লাভ হইত। যাক, অনেক বাজে কথা বকিয়া ফেলিলাম। আসল কথাটা এখন বলি, শােনন। না হয় সুরাে হরিচরণকে ভালবাসিত। দুর্গাদাসবাবুর যখন কুড়ি বৎসর বয়স, তখনকার কথাই বলিতেছি। দুর্গাদাস এতদিন কলিকাতাতেই পড়িত। বাড়ি আসিতে হইলে স্টিমারে দক্ষিণ দিকে যাইতে হইত তাহার পরেও প্রায় হাঁটা-পথে দশবারাে ক্রোশ আসিতে হইত ; সুতরাং পথটা বড় সহজগম্য ছিল না। এইজনই দুর্গাদাসবাবু বড় একটা বাড়ি যাইতেন না। | ছেলে বি.এ পাস হইয়া বাড়ি আসিয়াছে। মাতাঠাকুরানী অতিশয় ব্যস্ত। ছেলেকে ভাল করিয়া খাওয়াইতে, দাওয়াইতে, যত্নআত্মীয়তা করিতে, যেন বাটীসুদ্ধ সকলেই একসঙ্গে উৎকণ্ঠিত হইয়া পড়িয়াছে। | দুর্গাদাস জিজ্ঞাসা করিল, মা, এ ছেলেটি কে গা? মা বলিলেন, এটি একজন কায়েতের ছেলে ; বাপ-মা নেই, তাই কর্তা ওকে নিজে রেখেছেন। চাকরের কাজকর্ম সমস্তই করে, আর বড় শান্ত ; কোন কথাতেই রাগ করে না। আহ! বাপ-মা নেই—তাতে ছেলেমানুষ আমি বড় ভালবাসি। বাড়ি আসিয়া দুর্গাদাসবাবু হরিচরণের এই পরিচয় পাইলেন। যাহা হােক, আজকাল হরিচরণের অনেক কাজ বাড়িয়া গিয়াছে। ३०