পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

সেই নিজের ইচ্ছাকে যখন ফঁাকি দিয়া আত্মরক্ষা করিতে চাই, তখন সে আসিয়া জোর করে, সে-ই রাজশক্তি। শক্তি ব্যতীত শাসন হয় না। এমনি নীতি এবং দেশাচারকে মান্য করিতে যে আমাকে বাধ্য করে, সে-ই আমার সমাজ এবং সামাজিক আইন। আইনের উদ্ভব সম্বন্ধে নানা প্রকার মতামত প্রচলিত থাকিলেও মুখ্যতঃ রাজার সৃজিত আইন যেমন রাজা-প্রজা উভয়কেই নিয়ন্ত্রিত করে, নীতি ও দেশাচার তেমনি সমাজ-সৃষ্ট হইয়াও সমাজ ও সামাজিক মনুষ্য উভয়কেই নিয়ন্ত্রিত করে। | কিন্তু, এই আইনগুলি কি নিভুল? কেহই ত এমন কথা কহে । ইহার মধ্যে কত অসম্পূর্ণতা কত অন্যায়, কত অসঙ্গতি ও কঠোরতার শৃঙ্খল রহিয়াছে। নাই কোথায় ? রাজার আইনের মধ্যেও আছে, সমাজের আইনের মধ্যেও রহিয়াছে।। এত থাকা সত্ত্বেও, আইন-সম্বন্ধে আলােচনা ও বিচার করিয়া যত লােক যত কথা বলিয়া গিয়াছেন--যদিচ আমি তাঁহাদের মতামত তুলিয়া এই প্রবন্ধের কলেবর ভারাক্রান্ত করিতে চাহি না—মােটের উপর তাহারা প্রত্যেকেই স্বীকার করিয়াছেন, আইন, যতক্ষণ আইন -তা ভুলভ্রান্তি তাহাতে যতই কেন থাকুক না, ততক্ষণ—শিরােধার্য তাহাকে করিতেই হইবে । না করার নাম বিদ্রোহ। এবং “The righteousness of a cause is never alone a sufficient justification of rebellion." সামাজিক আইন-কানুন সম্বন্ধেও ঠিক এই কথাই খাটে না কি ? আমি আমাদের সমাজের কথাই বলি। রাজার আইন রাজা দেখিবেন, সে আমার বক্তব্য নয়। কিন্তু সামাজিক আইন-কানুনেভুলচুক অন্যায়-অসঙ্গতি কি আছে না-আছে, সে না হয় পরে দেখা যাইবে,—কিন্তু এই সকল থাকা সত্ত্বেও ত ইহাকে মানিয়া চলিতে হইবে। যতক্ষণ ইহা সামাজিক শাসন-বিধি, ততক্ষণ ত শুধু নিজের ৪৪