পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

শ্রীভববিভূতি ভট্টাচার্য এম. এ. মহােদয় তঁাহার ‘চাতুৰ্বর্ণ ও আচার' প্রবন্ধের গােড়াতেই চাতুৰ্বণ্য সম্বন্ধে বলিতেছেন,—“যে চাতুৰ্বর্ণ প্রথা হিন্দ, জাতির একটি মহৎ বিশেষত্ব, যাহা পৃথিবীর অন্য কোনও জাতিতে দৃষ্ট হয় না—যে সনাতন সুপ্রথা ও সুশৃঙ্খলার সহিত সমাজ পরিচালনার একমাত্র সুন্দর উপায়, যাহাকে কিন্তু পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ ও তঁাহাদের পদাঙ্কানুসারী দেশীয় বিদ্বাণ হিন্দর প্রধান ভ্রম এবং তাহাদের অধঃপতনের মূল কারণ বলিয়া নির্দেশ করেন, সেই চাতুব্বণ্য কত প্রাচীন, তাহা জানিতে হইলে বেদপাঠ তাহার অন্যতম সহায়”। | এই চাতুৰ্বর্ণ-প্রসঙ্গে শুধু যদি ইনি লিখিতেন—এই কথা কত প্রাচীন, তাহা জানিতে হইলে বেদপাঠ তাহার অন্যতম সহায়, তাহা হইলে কোন কথা ছিল না; কারণ, উক্ত প্রবন্ধে বলিবার বিষয়ই এই। কিন্তু ঐ যে-সব আনুষঙ্গিক বক্র কটাক্ষ, সার্থকতা কোনখানে? “যে সনাতন সুপ্রথা শান্তি ও সমাজ-পরিচালনার একমাত্র সুন্দর উপায়—” জিজ্ঞাসা করি, কেন? কে বলিয়াছে? ইহা যে ‘সুপ্রথা তাহার প্রমাণ কোথায়? যে-কোন একটা প্রথা শুধু পুরাতন হইলেই ‘সু হয় না। ফিজিয়ানরা যদি জবাব দেয়, “মশাই, বুড়া বাপ-মাকে জ্যান্ত পুতিয়া ফ্যালার নিয়ম যে আমাদের দেশের কত প্রাচীন, সে যদি একবার জানিতে ত আর আমাদের দোষ দিতে না।” সুতরাং এই যুক্তিতে ত ঘাড় হেঁট করিয়া আমাদিগকে বলিতে হইবে, “হাঁ বাপু, তােমার কথাটা সঙ্গত বটে। এ-প্রথা যখন এতই প্রাচীন, তখন আর ত কোন দোষ নাই। তােমাকে নিষেধ করিয়া অন্যায় করিয়াছি—বেশ করিয়া জ্যান্ত কবর দাও—এমন সুবন্দোবস্ত আর হইতেই পারে না। “অতএব শুধু প্রাচীনত্বই কোন বস্তুর ভালমন্দর সাফাই নয়। তবে এই যে বলা হইয়াছে যে, এই প্রথা কোন ব্যক্তিবিশেষের প্রবর্তিত নহে, ইহা সেই পরমপুরুষের একটি ‘অঙ্গ ৫৯