পাতা:আধাঁরে আলো - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

ব্যক্ত করিয়াছেন, তাহা সমীচীন বলিয়া মনে হয় না। ইনি বলিতেছেন যে, “আমাদের চাতুৰ্বণ্য প্রথার অর্বাচীনতা প্রতিপন্ন করিয়া আমাদের ভারতীয় সভ্যতাকে আধুনিকরূপে জগৎসমক্ষে প্রচার করা পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণের প্রধান উদ্দেশ্য হইতে পারে এবং সেই উদ্দেশ্যের বশবর্তী হইয়া ইত্যাদি। এরূপ উদ্দেশ্যকে সকলেই নিন্দা করিবে, সন্দেহ নাই। কিন্তু সমস্ত উদ্দেশ্যেরই একটা অর্থ থাকে। এখানে অর্থটা কি? একটা সত্য বস্তুর কদর্য বা কু-অর্থ করার হেয় উপায় অবলম্বন করিয়া চাতুর্বর্ণকে বৈদিক যুগ হইতে নির্বাসিত করিয়া তাহাকে অপেক্ষাকৃত আধুনিক প্রতিপন্ন করায় এই পাশ্চাত্য পণ্ডিতদিগের লাভটা কি ? চাতুব্বর্ণই কি সভ্যতা? ইহাই কি বেদের সর্বপ্রধান রত্ন ? চাতুৰ্বণ্যই বৈদিক যুগে থাকার প্রমাণ আমরা দাখিল না করিতে পারিলেই কি জগৎসমক্ষে প্রতিপন্ন হইয়া যাইবে যে, আমাদের পিতামহেরা বৈদিক যুগে অসভ্য ছিল ? পাশ্চাত্য পণ্ডিতেরা মিশর, বেবিলন প্রভৃতি দেশের সভ্যতা ৮/১০ হাজার বৎসর পূর্বের বলিয়া মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিয়াছেন। আমাদের বেলায় তঁাহাদের এতটা নীচতা প্রকাশ করিবার হেতু কি ? | তা ছাড়া, অধ্যাপক ম্যাক্সমুলার প্রতি যে শ্রদ্ধা প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন, তাহার সহিত ভববিভূতিবাবুর এই মন্তব্য খাপ খায় না। আমার ঠিক স্মরণ হইতেছে না (এবং বইখানাও হাতের কাছে নাই ), কিন্তু মনে যেন পড়িতেছে, যিনি Kant-এর Critique of the pure Reason-এর ইংরাজী অনুবাদের ভূমিকায় লিখিয়াছেন, জগতে আসিয়া যদি কিছু শিখিয়া থাকি ত সে ঋক্‌বেদ ও এই Critique হইতে। একটা গ্রন্থের ভুমিকায় আর একটা গ্রন্থের উল্লেখ এমন অযাচিতভাবে করা সহজ শ্রদ্ধার কথা নয়। তবে যে কেন তিনি ইহাকেই খাটো করিয়া দিবার প্রয়াস করিয়া ৬৪।