পাতা:আধুনিক সাহিত্য-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
আধুনিক সাহিত্য
১২২

আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করিতে থাকে।—

এসো এসো বঁধু এসো, আধো আঁচরে বসো,
নয়ন ভরিয়া তোমায় দেখি।

এই পদটিতে যে গভীর প্রীতি এবং একান্ত আত্মসমর্পণ প্রকাশ পাইয়াছে তাহা কি কথার দ্বারা হইয়াছে? না, আমরা মনের ভিতর হইতে একটা কল্পিত করুণ সুর সংযোগ করিয়া উহাকে সম্পূর্ণ করিয়া তুলিয়াছি? ঐ দুটি ছত্রের মধ্যে যে-ক’টি কথা আছে তাহার মতো এমন সামান্য এমন সরল এমন পুরাতন কথা আর কি হইতে পারে? কিন্তু উহার ঐ অত্যন্ত সরলতাই শ্রোতাদের কল্পনার নিকট হইতে সুর ভিক্ষা করিয়া লইতেছে। এইজন্য ঐ কবিতার সুর না থাকিলেও উহা গান। এইজন্যই—

হরষে বরষ-পরে যখন ফিরি রে ঘরে,
সে কে রে আমারি তরে আশা ক’রে রহে বলল;
স্বজন সুহৃদ সবে উজল-নয়ন যবে,
কার প্রিয় আঁখিদুটি সব চেয়ে সমুজল!

ইহা কানাড়ায় গীত হইলেও গান নহে, এবং—

চাহি অতৃপ্ত নয়নে তাের মুখপানে,
ফিরিতে চাহে না আঁখি ;
আমি আপনা হারাই, সব ভুলে যাই,
অবাক হইয়ে থাকি!

ইহাতে কোনো রাগিণীর নির্দেশ না থাকিলেও ইহা গান।

 সর্বশেষে আমরা আর্যগাথা হইতে একটি বাৎসল্যরসের গান উদ্ধৃত করিয়া তেছি। ইহাতে পাঠকগণ স্নেহের সহিত কৌতুকের সংমিশ্রণ দেখিতে পাইবেন।—