পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



৯৪
আনন্দ মঠ।

রূপে তাহার হৃদয় কাতর হইয়াছিল, শান্তির রূপের উপর সে দৃষ্টিপাত করিল না।

 শান্তি তখন গৃহান্তরে গেল। জিজ্ঞাসা করিল, “এটা কার ঘর?”

 গোবর্দ্ধন বলিল “জীবানন্দ ঠাকুরের।”

 শান্তি। সে আরার কে? কৈ কেউ তো এখানে নেই।

 গোব। কোথায় গিয়াছেন, এখনি আসিবেন।

 শান্তি। এই ঘরটি সকলের ভাল।

 গোব। তা এ ঘরটা ত হবে না।

 শান্তি। কেন?

 গোব। জীবানন্দ ঠাকুর এখানে থাকেন।

 শান্তি। তিনি না হয় আর একটা ঘর খুঁজে নিন্‌।

 গোব। তাকি হয়? যিনি এ ঘরে আছেন, তিনি কর্ত্তা বল্লেই হয়, যা করেন তাই হয়।

 শান্তি। আচ্ছা তুমি যাও, আমি স্থান না পাই, গাছ তলায় থাকিব।

 এই বলিয়া গোবর্দ্ধনকে বিদায় দিয়া শান্তি সেই ঘরের ভিতর প্রবেশ করিল। প্রবেশ করিয়া জীবানন্দের অধিকৃত কষ্ণাজিন বিস্তারণ পূর্ব্বক, তদুপরি শয়ন করিল।

 কিছুক্ষণ পরে জীবানন্দঠাকুর প্রত্যাগত হইলেন। হরিণ চর্ম্মের উপর একটা মানুষ শুইয়া আছে, ক্ষীণ প্রদীপালোকে অতটা ঠাওর হইল না। জীবানন্দ তাহারই উপর উপবেশন করিতে গেলেন। উপবেশন করিতে গিয়া শান্তির হাঁটুর উপর বসিলেন। হাঁটু অকস্মাৎ উচু হইয়া জীবানন্দকে ফেলিয়া দিল।

 জীবানন্দের একটু লাগিল। জীবানন্দ উঠিয়া একটু ক্রুদ্ধ হইয়া বলিলেন, “কে হে তুমি বেল্লিক?”