শান্তি। আমি পাপিষ্ঠা, তাতে সন্দেহ নাই; নহিলে স্ত্রীজাতি হইয়া পুরুষের কাছে প্রেম ভিক্ষা চাইতে যাইব কেন—আমার কথাটা রাখিবে? ছাড়িয়া দিতেছি।
জীব। ছি! ছি! ছি! আমি ব্রহ্মচারী—আমাকে এমন কথা বলিতে নাই—তুমি আমার—
শান্তি সভয়ে বলিল “চুপ কর! চুপ কর! চুপ কর! আমি শান্তি।”
এই বলিয়া শান্তি জীবানন্দকে ছাড়িয়া তাঁহার পায়ের ধূলা মাথায় লইল। পরে যোড়হাত করিয়া বলিল, “প্রভু! অপরাধ নিও না। কিন্তু ছি! পুরুষমানুষের ভালবাসার ভাণ্ করাকে ধিক! আমাকে চিনিতেই পারিলে না!”
তখন জীবানন্দের মনে সকল কথা প্রস্ফুট হইল। শান্তি নহিলে এ কার্য্য আর কার? শান্তি নহিলে এ রঙ্গ আর কে জানে? শান্তি নহিলে কার বাহুতে এত বল? তখন আনন্দিত হইয়া, অপ্রতিভ হইয়া জীবানন্দ কি বলিতে যাইতেছিলেন—কিন্তু অবকাশ পাইলেন না, গোঁসাইয়েরা আসিয়া পড়িয়াছিল। ধীরানন্দ আগে আগে। ধীরানন্দ এই সময়ে, জীবানন্দকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “গোলমাল কিসের?”
জীবানন্দ ফাঁপরে পড়িলেন, কি উত্তর দিবেন? শান্তি সেই সময়ে চুপি চুপি তাঁহাকে বলিল,
“কেমন বলিয়া দিই—তুমি আমায় ধরিয়াছিলে?”
এই বলিয়া ঈষৎ হাসিয়া শান্তি ধীরানন্দের কথার উত্তব দিল—বলিল,
“গোলমাল—একটা স্ত্রীলোকে চেঁচাইতেছিল। ‘আমার সতীত্ব নষ্ট করিল! আমার সতীত্ব নষ্ট করিল’ বলিয়া চেঁচাইতেছিল।