পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
আনন্দ মঠ।

কিন্তু কই? জীবানন্দঠাকুর এত খুঁজিলেন, আমি এত খুঁজিলাম, দেখিতে পাইলাম না। এই বনটার ভিতর আপনারা একবার দেখুন দেখি—ওদিকে শব্দ শুনিয়াছিলাম।”

 গোঁসাইদিগকে শান্তি অরণ্যের নিবিড় অংশ দেখাইয়া দিল। জীবানন্দ শান্তিকে চুপি চুপি জিজ্ঞাসা করিলেন,

 “বৈষ্ণবদিগকে এত দুঃখ দিয়া তোমার কি ফল? ও বনে গেলে কি ওরা ফিরিবে? সাপেই খাক্‌, কি বাঘেই খাক্‌।”

 শান্তি। যখন বৈষ্ণর স্ত্রীলোকের নাম শুনেছে, তখন একটু কষ্ট না পেলে ফিরিবে না। তা না হয় ফিরাইতেছি।

 এই বলিয়া শান্তি গোঁসাইজিদের ডাকিয়া বলিলেন, “আপনারা একটু সতর্ক থাকিবেন। কি জানি ভৌতিক মায়াও হইতে পারে।”

 শুনিয়া একজন গোঁসাই বলিল, “তাই সম্ভব। নহিলে স্ত্রীলোক কোথা হইতে আসিবে?”

 গোঁসাইয়েরা সকলেই এই মতে মত দিল। ভৌতিক মায়া স্থির করিয়া সকলেই মঠে ফিরিল। জীবানন্দ বলিল “এসো, আমরা এইখানে বসি—এ ব্যাপার টা আমাকে বুঝাইয়া বল—তুমি এখানে কেন—কি প্রকারে আসিলে—এ বেশই বা কেন? এত রঙ্গই বা কোথায় শিখিলে?” শান্তি বলিল “আমি কেন আসিলাম?—তোমার জন্য আসিয়াছি। কি প্রকারে আসিলাম?—হাঁটিয়া। এ বেশ কেন? আমার শক। আর এত রঙ্গ শিখিলাম কোথায়? একটি পুরুষমানুষের কাছে। সব তোমায় ভাঙ্গিয়া বলিব। কিন্তু এখানে বনে বসিব কেন? চল তোমার কুঞ্জে যাই।”

 জীব। আমার কুঞ্জ কোথায়?