হইয়া উত্তম ঘি, ময়দা, মুরগী, চাল যাইতেছিল—দেখিয়া ডোম বাগ্দীর দল লোভ সম্বরণ করিতে পারে নাই। তাহারা গিয়া, গাড়ী আক্রমণ করিল, কিন্তু কাপ্তেন টমাসের সিপাহীদের হস্তস্থিত বন্দুকের দুই চারিটা গুঁতা খাইয়া ফিরিয়া আসিল। কাপ্তেন টমাস তৎক্ষণেই কলিকাতায় রিপোর্ট পাঠাইলেন যে আজ ১৫৭ জন সিপাহী লইয়া ১৪,৭০০ বিদ্রোহী পরাজয় করা গিয়াছে। বিদ্রোহীদিগের মধ্যে ২১৫৩ জন মরিয়াছে আর ১২৩৩ জন আহত হইয়াছে। ৭ জন বন্দী হইয়াছে। কেবল শেষ কথাটাই সত্য। কাপ্তেন টমাস, ব্লেনহিম বা রসবাকের মত দ্বিতীয়যুদ্ধ জয় করিয়াছি মনে করিয়া গোঁপ দাড়ী চুমরাইয়া নির্ভয়ে ইতস্তত বেড়াইতে লাগিলেন। এবং ডনিওয়ার্থ সাহেবকে পরামর্শ দিতে লাগিলেন যে, আরকি, এক্ষণে বিদ্রোহ নিবারণ হইয়াছে, তুমি স্ত্রী পুত্রদিগকে কলিকাতা হইতে লইয়া আইস। ডনিওয়ার্থ সাহেব বলিলেন, “তা হইবে, আপনি দশদিন, এখানে থাকুন, দেশ আর একটু স্থির হউক, স্ত্রী পুত্র লইয়া আসিব।” ডনিওয়ার্থ সাহেবের ঘরে পালা মটন মুরগী ছিল। পনীরও তাঁহার ঘরে অতি উত্তম ছিল। নানাবিধ বন্যপক্ষী তাঁহার টেবিলের শোভা সম্পাদন করিত। শ্মশ্রুমান বাবুর্চীটি দ্বিতীয় দ্রৌপদী। সুতরাং বিনা বাক্যব্যয়ে কাপ্তেন টমাস সেইখানে অবস্থিতি করিতে লাগিলেন।
এদিকে ভবানন্দ মনে মনে গর গর করিতেছে, ভাবিতেছে কবে এই কাপ্তেন টমাস সাহেব বাহাদুরের মাথাটী কাটিয়া, দ্বিতীয় সম্বরারি বলিয়া উপাধি ধারণ করিবে। ইংরেজ যে ভারতবর্ষের উদ্ধারসাধন জন্য আসিয়াছিল, সন্তানেরা তাহা তখন বুঝে নাই। কি প্রকারে বুঝিবে? কাপ্তেন টমাসের সমসাময়িক ইংরেজেরাও তাহা জানিতেন না। তখন কেবল, বিধাতা মনে মনেই এ কথা