ছিল। ভবানন্দ ভাবিতেছিল এ অসুরের বংশ একদিনে নিপাত করিব, সকলে জমা হউক, একটু অসতর্ক হউক, আমরা এখন একটু তফাত থাকি। সুতরাং তাহারা একটু তফাত রহিল। কাপ্তেন টমাস সাহেব নিষ্কণ্টক হইয়া দ্রৌপদীর গুণগ্রহণে মনোযোগ দিলেন।
সাহেব বাহাদুর শিকার বড় ভাল বাসেন, মধ্যে মধ্যে শিবগ্রামের নিকটবর্ত্তী অরণ্যে মৃগয়ায় বাহির হইতেন। এক দিন ডনিওয়ার্থ সাহেবের সঙ্গে অশ্বারোহণে কতকগুলি শিকারী লইয়া কাপ্তেন টমাস শিকারে বাহির হইয়াছিলেন। বলিতে কি, টমাস সাহেব অসমসাহসিক, বলবীর্য্যে ইংরেজজাতির মধ্যেও অতুল্য। সেই নিবিড় অরণ্য ব্যাঘ্র, মহিষ, ভল্লুকাদিতে অতিশয় ভয়ানক। বহুদূর আসিয়া শিকারীরা আর যাইতে অস্বীকৃত হইল, বলিল ভিতরে আর পথ নাই, আমরা আর যাইতে পারিব না। ডনিওয়ার্থ সাহেবও সেই অরণ্যমধ্যে এমন ভয়ঙ্কর ব্যাঘ্রের হাতে পড়িয়া ছিলেন যে, তিনিও আর যাইতে অনিচ্ছুক হইলেন। তাঁহারা সকলে ফিরিতে চাহিলেন। কাপ্তেন টমাস বলিলেন “তোমরা ফেরো ফেরো, আমি ফিরিব না।” এই বলিয়া কাপ্তেন সাহেব নিবিড় অরণমধ্যে প্রবেশ করিলেন।
বস্তুতঃ অরণ্যমধ্যে পথ ছিল না। অশ্ব প্রবেশ করিতে পারিল না; কিন্তু সাহেব ঘোড়া ছাড়িয়া দিয়া কাঁধে বন্দুক লইয়া একা অরণ্যমধ্যে প্রবেশ করিলেন। প্রবেশ করিতে করিতে ইতস্ততঃ ব্যাঘ্রের অন্বেষণ করিতে করিতে ব্যাঘ্র দেখিলেন না। কি দেখিলেন? এক বৃহৎ বৃক্ষতলে প্রস্ফুটিত ফুল্লকুসুমযুক্ত লতাগুল্মাদিতে বেষ্টিত হইয়া বসিয়া ও কে? বাঘ কি?—বাঘ নয়, এক নবীন সন্ন্যাসী রূপে বন আলো করিয়াছে। প্রস্ফুটিত ফুল যেন সেই