মরিবে; কিন্তু দেখ কাজ করিয়া মরিতে হইবে, বিনা কার্য্যে কি মরা ভাল?―আমি কেবল দেশকে মা বলিয়াছি আর কাহাকেও মা বলি নাই, কেন না সেই সুজলা সুফলা ধরণী ভিন্ন আমরা অনন্যমাতৃক। আর তোমাকে মা বলিলাম, তুমি মা হইয়া সন্তানের কাজ কর, যাতে কর্য্যাদ্ধার হয় তাহা করিও, জীবানন্দের প্রাণরক্ষা করিও, তোমার প্রাণরক্ষা করিও।”
এই বলিয়া সত্যানন্দ “হরে মুবারে মধুকৈটভারে” গায়িতে গায়িতে নিষ্ক্রান্ত হইল।
অষ্টম পরিচ্ছেদ।
ক্রমে সন্তানসম্প্রদায়মধ্যে সম্বাদ প্রচারিত হইল যে সত্যানন্দ আসিয়াছেন, সন্তানদিগের সঙ্গে কি কথা কহিবেন, এই বলিয়া তিনি সকলকে আহ্বান করিয়াছেন। তখন দলে দলে সন্তানসম্প্রদায় অজয়তীরে আসিয়া সমবেত হইতে লাগিল। জ্যোৎস্নারাত্রিতে অজয়সৈকতপার্শ্বে বৃহৎ কাননমধ্যে আম্র, পনস, তাল, তিন্তিড়ী, অশ্বত্থ, বেল, বট, শাল্মলী প্রভৃতি বৃক্ষাদি রঞ্জিত মহাগহনে দশ সহস্র সশস্ত্র সন্তান সমবেত হইল। তখন সকলেই পরস্পরের মুখে সত্যানন্দের আগমনবার্তা শ্রবণ করিয়া মহা কোলাহলধ্বনি করিতে লাগিল। সত্যানন্দ কি জন্য কোথায় গিয়াছিলেন, তাহা সাধারণে জানিত না। প্রবাদ এই যে তিনি সন্তানদিগের মঙ্গলকামনায় তপস্যার্থ হিমালয়ে প্রস্থান করিয়াছিলেন। আজ সকলে কাণাকাণি করিতে লাগিল “মহারাজের তপঃসিদ্ধি হইয়াছে―আমাদের রাজ্য হইবে।” তখন বড় কোলাহল হইতে লাগিল। কেহ চীৎকার করিতে লাগিল “মার, মার,