পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
আনন্দ মঠ।

 সত্যানন্দ তাহাদিগকে পুনরায় আশীর্ব্বাদ করিয়া বলিলেন “হে সন্তানগণ, তোমাদের সঙ্গে আজ আমার বিশেষ কথা আছে। টমাসনামা এক জন বিধর্ম্মী দুরাত্মা বহুতর সন্তান নষ্ট করিয়াছে। আজ রাত্রে আমরা তাহাকে সসৈন্যে বধ করিব। জগদীশ্বরের আজ্ঞা―তোমরা কি বল?”

 ভীষণ হরিধ্বনিতে কানন বিদীর্ণ করিল। “এখনই মারিব―কোথায় তারা দেখাইয়ে দিবে চল!” “মার মার! শত্রু মার!” ইত্যাদি শব্দ দূরস্থ শৈলে প্রতিধ্বনিত হইল। তখন সত্যানন্দ বলিলেন, “সে জন্য আমাদিগকে একটু ধৈর্য্যাবলম্বন করিতে হইবে। শত্রুদের কামান আছে―কামান ব্যতীত তাহাদের সঙ্গে যুদ্ধ সম্ভবে না। বিশেষ তাহারা বড় বীরজাতি। পদচিহ্নের দুর্গ হইতে ১৭টা কামান আসিতেছে―কামান পৌঁছিলে আমরা যুদ্ধে যাত্রা করিব। ঐ দেখ প্রভাত হইতেছে―বেলা চারিদণ্ড হইলেই―ও কিও―”

 গুড়ুম্‌―গুড়ুম্‌―গুম্! অকস্মাৎ চারি দিকে বিশাল কাননে তোপের আওয়াজ হইতে লাগিল। তোপ ইংরেজের। জালনিবদ্ধ মীনদলবৎ কাপ্তেন টমাস সন্তানসম্প্রদায়কে এই আম্রকাননে ঘেরিয়া বধ করিবার উদ্যোগ করিয়াছে।


নবম পরিচ্ছেদ।

 “গুড়ুম্‌ গুড়ুম্‌ গুম্।” ইংরেজের কামান ডাকিল। সেই শব্দ বিশাল কানন কম্পিত করিয়া প্রতিধ্বনিত হইল, “গুড়ুম্‌ গুড়ুম্‌ গুম।” অজয়ের বাঁকে বাঁকে ফিরিয়া সেই ধ্বনি দুরস্থ আকাশপ্রান্ত হইতে প্রতিক্ষিপ্ত হইল। গুড়ুম্‌ গুড়ুম্‌ গুম্‌!”