পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
১৪৩

ইংরেজ ও সিপাহী নিহত হইল। সর্ব্বনাশ হইল দেখিয়া কাপ্তেন হে ও ওয়াটসন ভবানন্দের নিকট বলিয়া পাঠাইল “আমরা সকলে তোমাদিগের নিকট বন্দী হইতেছি আর প্রাণিহত্যা করিও না।” জীবানন্দ ভবানন্দের মুখপানে চাহিল। ভবানন্দ মনে মনে বলিল “তা হইবে না, আমায় যে আজ মরিতে হইবে।” তখন ভবানন্দ উচ্চৈঃস্বরে হস্তোত্তোলন করিয়া হরিবোল দিয়া বলিল “মার মার।”

 আর এক প্রাণী বাঁচিল না―শেষ এক স্থানে ২০।৩০ জন গোরা সৈন্য একত্রিত হইয়া আত্মসমর্পণে কৃতনিশ্চয় হইয়া অতি ঘোরতর রণ করিতে লাগিল। জীবানন্দ বলিল “ভবানন্দ, আমাদের রণজয় হইয়াছে, আর কাজ নাই, এই কয়জন ব্যতীত আর কেহ জীবিত নাই। উহাদিগকে প্রাণদান দিয়া চল আমরা ফিরিয়া যাই।” ভবানন্দ বলিল “একজন জীবিত থাকিতে ভবানন্দ ফিরিরে না―জীবানন্দ তোমায় দিব্য দিয়া বলিতেছি, যে তুমি তফাতে দাঁড়াইয়া দেখ একা আমি এই কয় জন ইংরেজকে নিহত করি।

 কাপ্তেন টমাস অশ্বপৃষ্ঠে নিবদ্ধ ছিলেন। ভবানন্দ আজ্ঞা দিলেন “উহাকে আমার সম্মুখে রাখ, আগে ঐ বেটা মরিবে তবে ত আমি মরিব।”

 কাপ্তেন টমাস বাঙ্গালা বুঝিত, বুঝিয়া ইংরেজসেনাকে বলিল “ইংরেজ! আমি তো মরিয়াছি, প্রাচীন ইংলণ্ডের নাম তোমরা রক্ষা করিও, তোমাদিগকে খ্রীষ্টের দিব্য দিতেছি, আগে আমাকে মার তার পর এই বিদ্রোহী কাফ্‌রিকে মার।”

 ভোঁ করিয়া একটী বুলেট ছুটিল, একজন আইরিসম্যান কাপ্তেন টমাসকে লক্ষ্য করিয়া বন্দুক ছুড়িয়াছিল। ললাটে