আইস, যে আগে শিখরে উঠিবে, সেই জিতিবে। বল, “বন্দে মাতরং।”
তখন পর্ব্বত কন্দর কানন প্রান্তর ধ্বনিত করিয়া গীতধ্বনি উঠিল “বন্দে মাতরং।” ধীরে ধীরে সন্তানসেনা পর্ব্বতশিখর আরোহণ করিতে লাগিল; কিন্তু তাহারা সহসা সভয়ে দেখিল, মহেন্দ্র সিংহ অতি দ্রুতবেগে পর্ব্বত অবতরণ করিতে করিতে তূর্য্যনিনাদ করিতেছে। দেখিতে দেখিতে পর্ব্বতশিখরদেশে নীলাকাশপটে কামানশ্রেণীসহিত, ইংরেজের গোলন্দাজ সেনা শোভিত হইয়াছে। উচ্চৈঃস্বরে বৈষ্ণবী সেনা গায়িল,
তুমি বিদ্যা তুমি ভক্তি,
তুমি মা বাহুতে শক্তি
ত্বং হি প্রাণাঃ শরীরে।
কিন্তু ইংরেজের কামানের গুড়ুম গুড়ুম গুম শব্দে, সে মহাগীতিশব্দ ভাসিয়া গেল। শত শত সন্তান হত আহত হইয়া, অশ্ব অস্ত্র সহিত, পর্ব্বত সানুদেশে শয়ান হইল। আবার গুড়ুম গুম দধিচির অস্থিকে ব্যঙ্গ করিয়া সমুদ্রের তরঙ্গভঙ্গকে তুচ্ছ করিয়া, ইংরেজের বজ্র গড়াইতে লাগিল। চাসার কর্ত্তনীসম্মুখে সুপক্ব ধান্যের ন্যার সন্তানসেনা খণ্ডবিখণ্ড হইয়া ধরাশায়ী হইতে লাগিল। বৃথায় জীবানন্দ, বৃথায় মহেন্দ্র যত্ন করিতে লাগিল। পতনশীল শিলারাশির ন্যায় সন্তানসেনা পর্ব্বতসানু হইতে ফিরিতে লাগিল। কে কোথায় পলায় ঠিকানা নাই। তখন একেবারে সকলের বিনাশসাধনের জন্য হুর্রে! হুর্রে! শব্দ করিতে করিতে গোরার পণ্টন পাহাড় হইতে নামিল। সঙ্গীন উঁচু করিয়া অতি দ্রুতবেগে, পর্ব্বতবিমুক্ত বিশালতটিনীপ্রপাতবৎ দুর্দ্দমনীয় অলঙ্ঘ্য অজেয় ব্রিটিশসেনা, পলায়নপর সন্তানসেনার পশ্চাৎ ধাবিত হইল? জীবা-
১৫