পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

[ ১৯ ]

সপ্তম পরিচ্ছেদ।

 চটীতে বসিয়া ভাবিয়া কোন ফলোদয় হইবে না বিবেচনা করিয়া মহেন্দ্র গাত্রোত্থান করিলেন। নগরে গিয়া রাজপুরুষদিগের সহায়তায় স্ত্রী কন্যার অনুসন্ধান করিবেন, এই বিবেচনায় সেই দিকেই চলিলেন। কিছু দূর গিয়া পথিমধ্যে দেখিলেন, কতকগুলি গোরুর গাড়ি ঘেরিয়া অনেকগুলি সিপাহী চলিয়াছে। “রাজনগর, বা নগর” কি তাহা বুঝাইতে হইতেছে।

 ১১৭৬ সালে বীরভূম প্রভৃতি প্রদেশ ইংরেজের শাসনাধীন হয় নাই। ইংরেজ তখন বাঙ্গালার দেওয়ান। তাঁহারা খাজনার টাকা আদায় করিয়া লন, কিন্তু তখনও বাঙ্গালীর প্রাণ সম্পত্তি প্রভৃতি রক্ষণাবেক্ষণের কোন ভার লয়েন নাই। তখন টাকা লইবার ভার ইংরেজের, আর প্রাণ সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের ভার পাপিষ্ঠ নরাধম বিশ্বাসহন্তা মনুষ্যকুলকলঙ্ক মীরজাফরের উপর। মীরজাফর আত্মরক্ষায় অক্ষম, বাঙ্গালা রক্ষা করিবে কি প্রকারে? মীরজাফর গুলি খায় ও ঘুমায়। ইংরেজ টাকা আদায় করে ও ডেস্‌পাচ্‌ লেখে। বাঙ্গালী কাঁদে আর উৎসন্ন যায়।

 বাঙ্গালার পক্ষে সাধারণ নিয়ম এই। কিন্তু বীরভূম প্রভৃতি প্রদেশ সম্বন্ধে একটু স্বতন্ত্র বন্দোবস্ত ছিল। বীরভূম প্রদেশ বীরভূমের রাজার অধীনে। রাজনগর বা নগর—তাঁহারই রাজধানী। বীরভূমের রাজারা পূর্ব্বে স্বাধীন ছিলেন সম্প্রতি মুরসিদাবাদের অধীন হইয়াছিলেন। পূর্ব্বে বীরভূমে হিন্দু স্বাধীন রাজা ছিলেন। কিন্তু আধুনিক রাজবংশ মুসলমান। যে সময়ের কথা লিখিতেছি, তাহার পূর্ব্বের রাজা আলিনকি খাঁ বাহাদুর