পাতা:আনন্দমঠ (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৮৮৩).djvu/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
আনন্দ মঠ।

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।
গোপাল গোবিন্দ মুকুন্দ সৌরে।”

 তখন কল্যাণী অপ্সরানিন্দিত কণ্ঠে মোহভরে ডাকিতে লাগিলেন,

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।”

 মহেন্দ্রকে বলিলেন, “বল,

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।”

 কানননির্গত মধুর স্বর আর কল্যাণীর মধুর স্বরে বিমুগ্ধ হইয়া কাতরচিত্তে ঈশ্বর মাত্র সহায় মনে করিয়া মহেন্দ্রও ডাকিল,

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।”

 তখন চারিদিক্‌ হইতে ধ্বনি হইতে লাগিল,

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।”

 তখন যেন গাছের পাখীরাও বলিতে লাগিল,

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।”

 নদীর কলকলেও যেন শব্দ হইতে লাগিল,

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।”

 তখন মহেন্দ্র শোকতাপ ভুলিয়া গেলেন—উন্মত্ত হইয়া কল্যাণীর সহিত একতানে ডাকিতে লাগিলেন,

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।”

 কানন হইতেও যেন তাঁহাদের সঙ্গে একতানে শব্দ হইতে লাগিল,

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।”

 কল্যাণীর কণ্ঠ ক্রমে ক্ষীণ হইয়া আসিতে লাগিল, তবু ডাকিতেছেন,

“হরে মুরারে মধুকৈটভারে।”

 তখন ক্রমে ক্রমে কণ্ঠ নিস্তব্ধ হইল, কল্যাণীর মুখে আর