কণ্ঠের স্বর—ও চখের চাহনি, এ বুড়োর কাছে কি লুকাতে পার? যদি এমন নির্ব্বোধই হইতাম, তবে কি এত বড় কাজে হাত দিতাম?”
শান্তি পোড়ারমুখী, তখন দুই চোক ঢাকা দিয়া কিছুক্ষণ অধোবদনে বসিল। পরক্ষণেই হাত নামাইয়া বুড়োর মুখের উপর বিলোল কটাক্ষ নিক্ষেপ করিয়া বলিল “প্রভু, দোষই বা কি করিয়াছি। স্ত্রী-বাহুতে কি কখন বল থাকে না?”
সত্য। গোষ্পদে যেমন জল।
শান্তি। সন্তানদিগের বাহুবল কি আপনি কখন পরীক্ষা করিয়া থাকেন?
সত্য। থাকি।
এই বলিয়া সত্যানন্দ, এক ইস্পাতের ধনুক, আর লোহার কতকটা তার আনিয়া দিলেন, বলিলেন যে “এই ইস্পাতের ধনুকে এই লোহার তারের গুণ দিতে হয়। গুণের পরিমাণ দুই হাত। গুণ দিতে দিতে ধনুক উঠিয়া পড়ে, যে গুণ দেয় তাকে ছুড়িয়া ফেলিয়া দেয়। যে গুণ দিতে পারে সেই প্রকৃত বলবান্।”
শান্তি ধনুক ও তীর উত্তমরূপে পরীক্ষা করিয়া বলিল “সকল সন্তান কি এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছে?”
সত্য। না, ইহা দ্বারা তাহাদিগের বল বুঝিয়াছি মাত্র।
শান্তি। কেহ কি এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় নাই?
সত্য। দুই জন মাত্র।
শান্তি। জিজ্ঞাসা করিব কি, কে কে?
সত্য। নিষেধ কিছু নাই। এক জন আমি।
শান্তি। দ্বিতীয়?
সত্য। জীবানন্দ।