পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

এই গান শুনিস নি? মানুষকেই যদি ঝাড়ে বংশে লোপাট করে ফেলেন তবে ভগবানের আর বেঁচে সুখ কি? লীলাখেলা করবেন কাকে নিয়ে? যা যা, নিশ্চিন্তি হয়ে ঘুমো গে।


 কিসে কি হয় কিছুই বলা যায় না। হয়তো ভুবনেশ্বরীর কথায় ত্রিভুবনেশ্বরীর একটু চক্ষুলজ্জা হল। হয়তো কার্যকারণ-পরম্পরায় প্রাকৃতিক নিয়মেই যা ঘটবার তা ঘটল। হঠাৎ একদিন খবরের কাগজে তিন ইঞ্চি হরফে ছাপা হল— ভয় নেই, দুষ্ট গ্রহ দূর হচ্ছে। বড় বড় জ্যোতিষীরা একযোগে জানিয়েছেন, বৃহস্পতি শনি ইউরেনস আর নেপচুন এই চারটে প্রকাণ্ড গ্রহের সঙ্গে এক রেখায় আসার ফলে গগন-চটির পিছনে টান পড়েছে, সে দ্রুতবেগে পুরাতন কক্ষে নিজের সঙ্গীদের মধ্যে ফিরে যাচ্ছে। অতি অল্পের জন্য আমাদের পৃথিবী বেঁচে গেল।

 বিপদ কেটে যাওয়ায় জনসাধারণ হাঁফ ছেড়ে বাঁচল, কিন্তু যাঁরা অসাধারণ তাঁরা নিশ্চিন্ত হতে পারলেন না। দেশের হোমরাচোমরা মান্যগণ্যদের প্রতিনিধিস্থানীয় একটি দল দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিবেদন করলেন, হুজুর, আমরা যে বিস্তর কসুর কবুল করে ফেলেছি এখন সামলাব কি করে? প্রধানমন্ত্রী সুপ্রীম কোর্টের চীফ জস্টিসের মত চাইলেন। তিনি রায় দিলেন, পুলিসের পীড়নের ফলে কেউ যদি অপরাধ স্বীকার করে তবে তা আদালতে গ্রাহ্য হয় না। গগনচটির আতঙ্কে লোকে যা বলে ফেলেছে তারও আইনসম্মত কোনও মূল্য নেই, বিশেষত যখন স্ট্যাম্প কাগজে কেউ অ্যাফিডাভিট করে নি।

 বৃহৎ চতুঃশক্তি এবং ইউ-এন-ও গোষ্ঠীভুক্ত ছোট বড় সকল রাষ্ট্র একটি প্রোটোকলে স্বাক্ষর করে ঘোষণা করলেন, গগন-চটির