পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজমহিষী
১১৫

মকড়া সব টপাটপ খেয়ে ফেলবে, ভঁইসী আর তার বচ্চা বহুত আরামসে নিদ যাবে।

 —বগ থাকবে কেন, পালিয়ে যাবে।

 —না হজুর, ওদের পংখ্ একটু, ছেঁটে দিব, উড়তে পারবে না। পন্‌দ্র দিন বাদ গাঁও সে আমার এক চাচা আসবে, বলেন তো বগুলা আনতে লিখে দিব, চার বগুলায় বিশ টাকা অন্দাজ খর্চ পড়বে।

 —বেশ, আজই লিখে দে।

 গোপীরামকে আরও কিছু উপদেশ দিয়ে হংসেশ্বর তাঁর অফিসঘরে বংশীধরকে নিয়ে গেলেন। প্রশ্ন করলেন, তার পর বংশী, ব্যাপারটা কি হে?

 মাথা নীচু করে হাত কচলাতে কচলাতে বংশীধর বলল, কাকাবাবু অনেক দিনের একটা দুরাশা আছে, তাই আপনার সম্মতি ভিক্ষা করতে এসেছি।

 হংসেশ্বর বললেন, অ। চকোরীকে বিয়ে করতে চাও এই তো?

 বংশীধর সভয়ে বলল, আজ্ঞে হাঁ।

 হংসেশ্বর বললেন, শোন বংশী, আমি স্পষ্ট কথার মানুষ। পাত্র হিসেবে তুমি ভালই, দেখতে চকোরীর চাইতে ঢের বেশী সুশ্রী, বিদ্যাও আছে, যত দূর জানি চরিত্রও ভাল। কিন্তু তোমার আর্থিক অবস্থা তো সুবিধের নয়। কলকাতায় একটা সেকেলে পৈতৃক বাড়ি আছে বটে, কিন্তু সেখানে তোমার মা দিদিমা ভাই বোন ভাগনেরা গিশগিশ করছে, সেই ভিড়ের মধ্যে চকোরী এক মিনিটও টিকতে পারবে না। তার পর তোমার আয়। মাইনে কত পাও হে? দু শ? পরে আড়াই শ হবে? খেপেছ, ওই টাকায় চকোরীকে পুষতে চাও? তার সাবান ক্রীম পাউডার পেণ্ট লিপস্টিক সেণ্ট এই সবের খরচই তো মাসে আড়াই শ-র ওপর। তুমি হয়তো ভেবেছ মেয়ে-জামাইএর ভরণ-