পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চিঠি বাজি
১৩৯

বাঁধিয়ে শোবার ঘরে টাঙ্গিয়ে রাখা যাবে। তাতে বিষে বিষক্ষয় হবে, কি বলেন? আপনার অভিপ্রায় জানাবেন। ইতি। সুনন্দা।

 সুকান্ত উত্তর লিখল।—সুনন্দা, তোমাকে আজ নাম ধরে সম্বোধন করছি, কারণ আমাদের দুজনের মধ্যে এখন আর কোনও লুকোচুরি রইল না, বিবাহের বাধাও কিছু নেই। লোকে বলে আমি একটু বেশী গম্ভীর প্রকৃতির লোক। শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধুরা অধিকন্তু বলে আমি একটু বোকা। তোমার চিঠি পড়ে বুঝেছি তুমি আমুদে মানুষ, আর মামাবাবুর চিঠিতে জেনেছি বি. এস-স ফেল হলেও তুমি বেশ চালাক। মনে হচ্ছে তোমার আর আমার স্বভাব পরস্পরের পূরক অর্থাৎ কমপ্লিমেণ্টারি। সাইকোলজিস্টদের মতে এই হল আসল রাজযোটক, আদর্শ দম্পতির লক্ষণ। আজ ষোলই ফাল্‌গুন, সাত দিন পরেই আমাদের বিবাহ। তোমার সঙ্গে সাক্ষাৎ আলাপের আনন্দ এখনই কল্পনায় উপভোগ করছই। তোমার সুকান্ত।

 কিছুদিন পরে সুনন্দার চিঠি এল।—যাঃ, সব ভেস্তে গেল, এমন মুশকিলেও মানুষে পড়ে! পবন ভাদুড়ী এখানে এসেছে। কাল আমার সঙ্গে দেখা করে বলল, দেখ সুনন্দা, এখন আমি স্বাধীন, ভাল রোজগার করি, বাপ মায়ের বশে চলবার কোনও দরকার নেই। তুমি আমার সঙ্গে চল, ব্যাংগালোরে সিভিল বা হিন্দু ম্যারেজ যা চাও তাই হবে।

 এই তো পরিস্থিতি। আমার অবস্থাটা আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। পবন ভাদুড়ীকে হাঁকিয়ে দেওয়া আমার সাধ্য নয়, কালই অর্থাং আপনার নির্ধারিত বিবাহের দু-দিন আগেই পবনের সঙ্গে আমি পালাচ্ছি। কিন্তু আপনার প্রাতি আমার একটা কর্তব্য আছে,