পাতা:আনন্দীবাঈ ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম (১৯৫৭).pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
আনন্দীবাঈ ইত্যাদি

আমাদের উদ্দেশ্য ভোটারদের হুঁশিয়ার করে দেওয়া, যাতে তারা ধূর্ত লোকের কথায় ভুলে অপাত্রে ভোট না দেয়।

 —খুব সাধু সংকল্প। তোমাদের বেগনী সাজের মানে কি?

 —বেগনী হচ্ছে সত্যের প্রতীক।

 —এ যে নতুন কথা শোনোচ্ছ। সাদাই তো সত্যের রঙ।

 —আজ্ঞে না। সাদা হচ্ছে সব চাইতে ভেজাল রঙ, সমস্ত রঙের খিচুড়ি, ফিজিক্স পড়ে দেখবেন। বুঝিয়ে দিচ্ছি শুনুন। কংগ্রেসের রঙ সাদা, কমিউনিস্টদের লাল, হিন্দু মহাসভার নারঙ্গী বা গেরুয়া। বৌদ্ধ জৈন শ্রমণদের রঙ হলদে, পাকিস্তানী পীরদের সবুজ, জাহাজী খালাসী আর মোটর মিস্ত্রীদের নীল, এবং মেটে হচ্ছে চাষা আর মজুরের রঙ। বাকী থাকে বেগনী, সব চেয়ে সক্ষম তরঙ্গের রঙ, তাই আমরা নিয়েছি। আমাদের ম্যানিফেস্টো পড়ছি, মন দিয়ে শুনুন।—

 হে দেশের লোক, স্ত্রী পুরুষ যুবা বৃদ্ধ ধনী দরিদ্র শিক্ষিত অশিক্ষিত সবাই, সাবধান সাবধান। যা বলছি আপনাদেরই মঙ্গলের জন্যে, আমাদের কিছুমাত্র স্বার্থ নেই। ইলেকশনে আপনারা অবশ্যই ভোট দেবেন, কিন্তু খবরদার, ফন্দিবাজ লোকের কথায় ভুলবেন না। যারা ভোট চাইবে তাদের সম্বন্ধে ভাল রকম খোঁজ নেবেন, কন্যাদানের পূর্বে ভাবী জামাই সম্বন্ধে যেমন খোঁজ নেন তার চাইতে ঢের বেশী খোঁজ ভোট দানের পূর্বে নেবেন। কারও উপরোধ শুনবেন না, বক্তৃতায় ভুলবেন না, খুব বিচার করে যোগ্যতম পাত্রকে ভোট দেবেন। কংগ্রেসী, প্রজাতন্ত্রী, কমিউনিস্ট, হিন্দু মহাসভিস্ট, ইত্যাদি হলেই লোকে ভাল হয় না, কোনও দলের মাতব্বর হলেই সে দেশের মঙ্গল করবে এমন কথা বিশ্বাস করবেন না। চোর ঘুষখোর কুচরিত্রকে ভোট দেবেন না, মাতাল গেঁজেল আফিমখোর লম্পট পরনারীসক্তকে ভোট